লেবাননে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির এ হামলায় একের পর এক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। অন্যদিকে লেবাননে অভিযান চালাতে গিয়েও প্রাণ যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাদের। এ পর্যন্ত শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহ।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) ইরানের সংবাদমাধ্যম ইরনার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, লেবাননে স্থল অভিযানের পর ইসরায়েলের অন্তত ১০০ সেনা নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন আর অন্তত এক হাজার সেনা।
গোষ্ঠীটি আরও জানিয়েছে, যোদ্ধারা ফিলিস্তিনের অধিকৃত বিভিন্ন অঞ্চল বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছে। এছাড়া জাবাল আমিল অঞ্চলের আল-মালকিয়া গ্রামসহ উত্তর ইসরায়েলের অধিকৃত বসতিগুলোকে নিশানা করে রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়েছে।
হিজবুল্লাহর অপারেশন রুম আরও জানিয়েছে, খায়বার সিরিজের অপারেশনের অংশ হিসেবে অন্তত ৭০টি সফল অভিযান চালিয়েছে।
বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য। গত এক বছরে বিশ্বে অনেক বিপদের মুহূর্ত এসেছে। তবে এবারেরটি সবচেয়ে ভয়াবহ। সম্প্রতি লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। এরপর লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইরান প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইসরায়েলে। তেহরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে তেলআবিব।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো উত্তেজনা কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর পক্ষ থেকে সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্য সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। গত এক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার কারণে মূলত এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যায় লেবাননের বৈরুতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইসরায়েল বোমা হামলা চালায়। সেখানে ব্যাপক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অনেক আবাসিক ভবন ধসে পড়ে। মাটিতে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। আকাশ ধুলাবালি ও ধোঁয়ায় ভরে ওঠে। পুরো লেবানন থেকে ওই দৃশ্য দেখা যায়। এ হামলা হয় মাটির নিচে থাকা হিজবুল্লাহর বাংকার লক্ষ্য করে। এ হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। ইসরায়েলের এক সপ্তাহ ধরে চালানো হামলায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর নাসরুল্লাহর মৃত্যুর খবর আসে।
তারও এক সপ্তাহ আগে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে পর পর অসংখ্য ওয়াকি-টকি এবং পেজার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং তিন হাজারজনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।
মন্তব্য করুন