প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের প্রধান বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহ। মঙ্গলবার ঘাঁটিটিতে এ হামলা চালানো হয়।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) মেহের নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রধান বিমান ঘাঁটিতে উত্তেজনার মধ্যে প্রথমবারের মতো হামলা করা হয়েছে। এ সময় ঘাঁটিটিকে নিশানা করে ব্যাপকহারে রকেটছোড়া হয়েছে।
মঙ্গলবার গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ হাহোট্রিম ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। এ ঘাঁটিটিতে বিমানবাহিনীর আবাসন, পরিবহন ও ইঞ্জিন কারখানা রয়েছে। হামলায় এগুলো নিশানা করা হয়েছে। ইসরায়েলের এ ঘাঁটিটি লেবানন-ফিলিস্তিন সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৪০ কিলোমিটার দূরে অধিকৃত হাইফা শহরের দক্ষিণে অবস্থিত।
হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ইসরায়েলে এ হামলা ছিল খায়বার সিরিজের অপারেশনের অংশ। এটির মূল লক্ষ্য সংবেদনশীল গোয়েন্দা ঘাঁটি এবং অন্যান্য কৌশলগত অবস্থান। এছাড়া হুনিন ব্যারাকে রামিম ব্রিগেডের কমান্ড সেন্টারেও ড্রোন ছোড়া হয়েছে। এটি তার লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হেনেছে।
বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য। গত এক বছরে বিশ্বে অনেক বিপদের মুহূর্ত এসেছে। তবে এবারেরটি সবচেয়ে ভয়াবহ। সম্প্রতি লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। এরপর লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ইরান প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইসরায়েলে। তেহরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে তেলআবিব।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো উত্তেজনা কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর পক্ষ থেকে সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্য সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। গত এক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার কারণে মূলত এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যায় লেবাননের বৈরুতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইসরায়েল বোমা হামলা চালায়। সেখানে ব্যাপক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অনেক আবাসিক ভবন ধসে পড়ে। মাটিতে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। আকাশ ধুলাবালি ও ধোঁয়ায় ভরে ওঠে। পুরো লেবানন থেকে ওই দৃশ্য দেখা যায়। এ হামলা হয় মাটির নিচে থাকা হিজবুল্লাহর বাংকার লক্ষ্য করে। এ হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। ইসরায়েলের এক সপ্তাহ ধরে চালানো হামলায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর নাসরুল্লাহর মৃত্যুর খবর আসে।
তারও এক সপ্তাহ আগে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে পর পর অসংখ্য ওয়াকি-টকি এবং পেজার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং তিন হাজার জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।
মন্তব্য করুন