কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ পিএম
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ইসরায়েলি সেনাদের যেভাবে উগ্রবাদী তৈরি করল নেতানিয়াহু সরকার

পুরোনো ছবি
পুরোনো ছবি

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) সম্প্রতি এমন একপর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে উগ্রবাদ এবং ধর্মীয় চরমপন্থার প্রভাব ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। গাজা ও লেবাননে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সামরিক আগ্রাসন এর স্পষ্ট উদাহরণ, যা শুধু ফিলিস্তিনিদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন বাড়িয়ে তুলছে না বরং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উগ্রবাদী প্রবণতার জন্য ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার দায়ী, যিনি সেনাবাহিনীর মধ্যে উগ্র জাতীয়তাবাদী এবং ধর্মীয় চরমপন্থিদের অনুপ্রাণিত করেছেন।

ইসরায়েল দেশটি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড়ানোর কথা বললেও, বাস্তবে ইহুদি ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো ক্রমেই সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক কাঠামোতে প্রভাব বিস্তার করেছে। এদের মূল আদর্শ হচ্ছে ‘পবিত্র ভূমি’ পুনর্দখল, যার অংশ হিসেবে গাজা ও পশ্চিম তীরে তারা সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে।

বিশেষ করে, ইসরায়েলি সেনাদের উগ্রবাদী মনোভাবের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ইহুদি ধর্মীয় নেতা আব্রাহাম আইজ্যাক কুকের মতবাদ। কুক বিশ্বাস করতেন ইসরায়েলের ভূমি ইহুদিদের ঈশ্বরপ্রদত্ত অধিকার এবং এই ধারণা সেনাবাহিনীতে একটি ধর্মীয় চরমপন্থার জন্ম দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ফিলিস্তিনির অঞ্চল দখলের পর থেকে এই ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো সেনাবাহিনীতে প্রবেশ করতে শুরু করে এবং ১৯৯০-এর দশকে তাদের সংখ্যা ছিল মাত্র ২-৪ শতাংশ। তবে বর্তমানে আইডিএফের প্রায় ৪০ শতাংশ সদস্য এই উগ্রবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী, যা গত কয়েক দশকে বিপুলভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলো সেনাবাহিনীর উচ্চপদে অধিষ্ঠিত হয়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর সামরিক হামলা তীব্র করেছে।

এদিকে নেতানিয়াহু সরকারের সাম্প্রতিক নীতির ফলস্বরূপ, ফিলিস্তিনিদের ওপর সেনাদের হামলা বাড়ানো হয়েছে। গাজার বেসামরিক অবকাঠামো, হাসপাতাল ও ধর্মীয় স্থানগুলোতে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। এসব হামলার উদ্দেশ্য একটাই গাজা ও পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। উগ্র জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো এ আগ্রাসনকে বৈধতা দেয় এ রকম করে, তারা ঈশ্বরের আদেশ পালন করছে এবং তাদের আক্রমণকে বৈধ বলে মনে করে।

এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে নেতানিয়াহু সরকার এসব চরমপন্থি গোষ্ঠীর মধ্যে সহানুভূতি তৈরি করে এবং তাদেরকে সামরিক বাহিনীতে প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ দেয়। এতে ফিলিস্তিনির ওপর হামলার মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে।

অপরদিকে সেনাবাহিনী রাজনৈতিকভাবে আরও একতাবদ্ধ হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কাঠামো এবং সমাজের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে, যা ভবিষ্যতে দেশটির স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আগামীতে যদি ইসরায়েলে কোনো উদারপন্থি সরকার ক্ষমতায় আসে, তবে আইডিএফ ও সরকারের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হবে অনিবার্য। এর ফলে দেশটির অভ্যন্তরীণ শান্তি ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মোটরসাইকেল-নসিমন সংঘর্ষে দুই মাদ্রাসাছাত্র নিহত

পুলিশের ঊর্ধ্বতন ২৮ কর্মকর্তাকে বদলি

আজ ১৩ নভেম্বর, ইতিহাসের এই দিনে কী ঘটেছিল

১৩ নভেম্বর : আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা

বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, ৪ নারী আটক

চবিতে ‘বই বিনিময় উৎসব’, পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতনতার বার্তা শিক্ষার্থীদের

বগুড়া কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

কৃষক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

১০

চলন্ত গাড়িতে ডাকাতির লোমহর্ষক বর্ণনা

১১

৯৯৯-এ ফোন, নিখোঁজ হওয়া শিশু উদ্ধার

১২

টিম গেমে টিমম্যান কোথায়

১৩

ভারতীয় হাইকমিশনের আয়োজনে নজরুলের শ্যামাসংগীত অনুষ্ঠিত

১৪

ঢাবির ৩টি গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল উপস্থাপন

১৫

এবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকেও সরানো হলো শেখ মুজিবের ছবি

১৬

সাভারে বিএনপি নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, থানায় অভিযোগ

১৭

ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছ না লাগানোর নির্দেশ

১৮

রাজবাড়ীতে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

১৯

জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা প্রয়োজন : প্রধান উপদেষ্টা

২০
X