কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গাজা যুদ্ধ কি দ্রুতই শেষ হচ্ছে?

ছবি : রয়টার্স
ছবি : রয়টার্স

গত বছরের ৭ অক্টোবর, যখন গাজার হামাস একটি নজিরবিহীন হামলা চালায়, তখন ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নাম বারবার উচ্চারিত হয়েছে। তিনি ছিলেন হামাসের কৌশলগত মাথা, যিনি সংগঠনের বিভিন্ন স্তরে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু ১৭ অক্টোবর, ইসরায়েলের হামলায় তার মৃত্যু আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি নতুন মোড় নিয়ে এসেছে।

সিনওয়ারের হত্যাকে ইসরায়েল একটি কৌশলগত বিজয় মনে করছে এখনো পর্যন্ত। তবে ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায়, হামাসের মতো সংগঠনের ক্ষেত্রে একটি নেতার মৃত্যু সাধারণত তাদের কার্যক্রমকে রুদ্ধ করে না। হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ইয়াসিন হত্যার পরও সংগঠনটি পুনরুদ্ধার হয়ে তাদের সক্ষমতা জানান দিয়েছে। তাই হামাস প্রধানের অনুপস্থিতি যদিও সংগঠনের জন্য একটি শূন্যতা সৃষ্টি করবে, কিন্তু এটি হামাসের আদর্শকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না মনে করা হচ্ছে অতীত ইতিহাসের শিক্ষা থেকে।

অপরদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ঘোষণায় প্রতিফলিত হয়, যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। তারা মনে করে, সিনওয়ারের মৃত্যু হামাসের দুর্বলতা সৃষ্টি করবে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে গাজার পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা বাড়াবে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ যুদ্ধের অবসান হওয়া খুবই কঠিন, কারণ হামাসের আদর্শ এবং তাদের যোদ্ধাদের প্রতিশ্রুতি এখনো অটুট রয়েছে।

সিনওয়ারের মৃত্যুর পর হামাসের সম্ভাব্য কৌশল পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। কিন্তু সংগঠনটি যে সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত, তা স্পষ্ট। হামাসের যোদ্ধারা তাদের নিজেদের ইতিহাস, পরিবার এবং আত্মীয়স্বজন হারানোর পর এখন আর কিছু হারানোর নেই। এ পরিস্থিতিতে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধের অবসানের চেষ্টা করা হলেও, হামাস তাদের দাবি ও অবস্থানে দৃঢ় থাকতে পারে।

গাজার পরিস্থিতি এখন ইতিহাসের সবচেয়ে সংকটময় সময়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইসরায়েলের হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে এবং যুদ্ধের অঙ্গীকার নিয়ে যোদ্ধাদের মধ্যে এক ধরনের ঘৃণা ও প্রতিশোধের জাগরণ রয়েছে। এ অবস্থা শুধু গাজা নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক গঠনে এক নতুন ধারা তৈরি করতে পারে।

হিজবুল্লাহ ও ইরানের সম্ভাব্য হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। তাদের সামরিক শক্তি এখনো পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়নি এবং সংকটের এ সময়ে তাদের অনুপ্রবেশ সংঘাতকে একটি নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে।

মোটের ওপর, ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যু গাজার পরিস্থিতিকে জটিল করেছে, কিন্তু এটি হামাসের সংগ্রামকে শেষ করতে সক্ষম হবে না। ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে যে আদর্শ এবং সংগ্রামের ইতিহাস বিদ্যমান, তা তাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। ইসরায়েল ও পশ্চিমাদের আশা থাকা সত্ত্বেও, সংঘাতের সমাপ্তি এখনো দূরবর্তী বলেই মনে হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

লেবানন থেকে দেশে ফিরছেন ৫৪ প্রবাসী

রাজনীতিতে যুক্ত না হতে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের শপথ পাঠ

‘১৫ বছরে কথিত বুদ্ধিজীবীরা আত্মা বিক্রি করে দাসত্বকে মেনে নিয়েছে’

গোপালগঞ্জে বিএনপি নেতা মেজবাহর মতবিনিময় সভা 

নিউক্লিয়াস পার্টিতে নতুন দুই মুখ

রাতেই ৭ অঞ্চলে তীব্র ঝড়ের শঙ্কা

ভারত সীমান্তে আ.লীগের সরকার গঠনের গুঞ্জনে বিক্ষোভ

মানুষের সাথে ‘ধানের শীষের’ শুভেচ্ছা বিনিময় যুবদল সভাপতির

নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন : আব্দুল কাদের

নাটোরে ট্রাকচাপায় ব্যাংক কর্মকর্তা নিহত

১০

হাজারও শহীদের রক্তে অর্জিত বিজয় ধরে রাখতে হবে : এমরান চৌধুরী

১১

ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় রাবি ছাত্রদলের দুই নেতাকে অব্যাহতি

১২

ইরানের ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধজাহাজ নিয়ে হাজির রাশিয়া

১৩

কালীগঞ্জে শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে

১৪

আ.লীগের এই দেশে আর রাজনীতি করার অধিকার নেই : এলডিপি

১৫

জুলাইয়ের বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তি ঘটেছে : আসিফ নজরুল

১৬

গাজা যোদ্ধাদের নতুন প্রধানের মৃত্যুতে জামায়াতের শোক 

১৭

দ্বিতীয় বিয়ে করায় প্রথম স্ত্রীর হাতে ইমাম খুন

১৮

কয়ছরসহ যুক্তরাজ্য বিএনপির ৮৫ নেতা দেশে ফিরছেন রোববার

১৯

ফিলিস্তিনকে সৌদি আরবের হাতে তুলে দেবে যুক্তরাষ্ট্র?

২০
X