লেবাননে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে বাড়ছে লাশের মিছিল। নিজের মিত্রের ডেরায় এমন হামলার মধ্যেই এবার নতুন মিসাইল উন্মোচন করল ইরান।
অত্যাধুনিক এই মিসাইল ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে ওই মিসাইল উন্মোচন করে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী।
তেহরানে শনিবার এক সামরিক প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই প্রথমবারের মতো নিজেদের নতুন ব্যালিস্টিক মিসাইল জিহাদের উন্মোচন করে ইরান। নতুন মিসাইলটি তৈরি করেছে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অ্যারোস্পেস ফোর্স। নতুন এই মিসাইলটি তরল জ্বালানিচালিত। ১ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম এই মিসাইলের রয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য।
জিহাদের ডুয়েল-মিসাইল লঞ্চার রয়েছে, যা ইরানের অন্য তরল জ্বালানিচালিত মিসাইলের চেয়ে আলাদা। ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম জানিয়েছে, জিহাদ মূলত কিয়াম মিসাইলের উন্নততর ভার্সন। এর আগে কিয়ামের রেঞ্জ ৮০০ কিলোমিটার থেকে ১ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছিল। পাশাপাশি এর ওয়ারহেড গাইডেড করা হয়েছিল। ২০১০ সালে কিয়াম মিসাইল প্রকাশ্যে আনে ইরান।
জিহাদ মিসাইলের ওয়ারহেডের ওজন প্রায় ৬০০ কেজি। এই মিসাইলটি শব্দের চেয়ে ৮ গুণ বেশি গতিতে ছুটতে সক্ষম। উন্নত এই মিসাইলের ভিন্ন ভিন্ন লঞ্চ প্লাটফর্ম রয়েছে, এর ফলে একসঙ্গে দুটি মিসাইল ছোড়া যায়। তরল জ্বালানিচালিত মিসাইলের প্রস্তুতির জন্য একটু বেশি সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু একযোগে দুটি মিসাইল লঞ্চ করার সুযোগ থাকায় অপারেশনাল ইফিশিয়েন্সি বেড়েছে।
নিজেদের ব্যালিস্টিক মিসাইল কর্মসূচিতে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ উন্নতি করেছে ইরান। তবে তাদের এসব মিসাইল কতটা অত্যাধুনিক তা স্বাধীনভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গেল এপ্রিলে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রথমবারের মতো ইরানের মাটি থেকে প্রায় ৩৫০টি মিসাইল ছোড়া হয়েছিল। সেগুলোর প্রায় ৯৯ শতাংশই ভূপাতিত করেছে ইসরায়েল ও মিত্ররা।
নিজেদের অস্ত্র ভান্ডারে নতুন নতুন মিসাইল যোগ করায়, এ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইলের পেছনে ইরান বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করায়, তা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের। সমরাস্ত্রে ইরান যতই শক্তিশালী হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্য ততটাই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার শঙ্কায় রয়েছে।
এমতাবস্থায় ইরানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। ইরানের মিসাইল কর্মসূচি লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তারা। এতে মিসাইল উৎপাদন, যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি হস্তগত হওয়া কঠিন হয়ে উঠতে পারে ইরানের জন্য। রাশিয়াকে ইরান মিসাইল সরবরাহ করেছে এমন অভিযোগে সম্প্রতি তেহরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যদিও তাতে দমানো যাচ্ছে না ইরানকে।
মন্তব্য করুন