ইসরায়েলের বোমা হামলার ভয়ে লেবাননে স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সির (এনএনএ) বরাতে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরা এ তথ্য জানায়।
লেবাননের শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠান পরিচালকদের এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলার কারণে স্কুলগুলোতে নিরাপদ উপস্থিতি সম্ভব নয়।
এনএনএ জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে সতর্ক করতে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাসঙ্গিক শিক্ষা কার্যক্রমও বন্ধের বিষয়ে বলা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা আগেই লেবানিজ ইউনিভার্সিটি দক্ষিণের শহর সিডন, নাবাতিহ এবং টায়ারে তার শাখাগুলো বন্ধ করার ঘোষণা দেয়। এর আগে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পেজার হামলার পর বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছিল লেবানন।
গত শনিবার রাতে ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননের ৪০০টির বেশি স্থানে হামলা চালায়। এরপর স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় দেশটি। এটি শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর চরম আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, লেবাননজুড়ে সাম্প্রতিক ওয়াকি-টকি ও পেজার বিস্ফোরণে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর একাধিক ঊর্ধ্বতন কমান্ডারসহ ৩৭ জন নিহত হয়েছে। প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলের রামাত ডেভিড ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহও। ফলে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলি বাহিনী ও হিজবুল্লাহর মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সংঘাতের ঘটনা।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে হুমকি মোকাবিলায় দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে ব্যাপক হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় অনেকগুলো যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছে।
লেবাননের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান শনিবার সন্ধ্যা থেকে দক্ষিণ লেবাননে বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে। এর আগে শুক্রবার ১৫০টি রকেট দিয়ে ইসরায়েলের সীমান্ত এলাকায় হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। তবে এই হামলায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানানো হয়নি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লেবানন থেকে ছোড়া রকেটে ইসরায়েলে উত্তরাঞ্চলের একাধিক স্থাপনা ও বাড়িঘরে আগুন ধরে গেছে। ইসরায়েলের জরুরি মেডিকেল সেবা সংস্থা বলেছে, রকেটের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে কমপক্ষে চারজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনই ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় হাইফা শহরের বাসিন্দা।
ইসরায়েলের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা মুহুর্মুহু রকেট হামলার ঘটনায় উত্তরাঞ্চলের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। গত প্রায় এক বছর ধরে চলা গাজা যুদ্ধের মাঝে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে সর্বশেষ এই উত্তেজনায় ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
মন্তব্য করুন