মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ প্রতিরোধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি লেবানন-ইসরায়েলসহ সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। জানান, যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স এ ব্যাপারে একমত। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লেবাননে পেজার বিস্ফোরণের ঘটনায় ইসরায়েলের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ কঠোর প্রতিশোধের জন্য যোদ্ধাদের প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে। অপরদিকে সীমান্ত অঞ্চলে নতুন করে বিমান হামলা শুরু করেছে নেতানিয়াহুর বাহিনী। এ পরিস্থিতিতে অন্য আঞ্চলিক শক্তি ইরান, তুরস্ক, ইয়েমেনের হুতি, ইরাকের মিলিশিয়া, হামাস ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে। এমন সময় মার্কিন অবস্থান জানাতে বক্তব্য দেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তার বক্তব্যে স্পষ্ট যে, ইসরায়েল-লেবানন সর্বাত্মক যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র চায় না।
ব্লিঙ্কেন প্যারিসে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন সেজোর্নের সাথে আলোচনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে এবং বিশেষ করে লেবাননের ক্ষেত্রে ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্র সব পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানাতে একমত। আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানাতে একত্রিত হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনো পক্ষের দ্বারা এমন কোনো উত্তেজনামূলক পদক্ষেপ দেখতে চাই না, যা গাজা সংঘাতে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যকে বিপন্ন করে।’
মঙ্গলবার লেবাননে পেজার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় অন্তত ৯ সদস্য নিহত হন। এরপর নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, মার্কিন কর্মকর্তারা এ অভিযানের বিষয়ে ব্রিফ করেছেন। তারা বলেছেন, লেবাননে হিজবুল্লাহ সদস্যদের ওপর মঙ্গলবার হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাইওয়ানের তৈরি পেজারে বিস্ফোরক উপাদান লুকিয়ে রেখেছিল।
এরপর বুধবার দেশটিতে দ্বিতীয় দফায় তারবিহীন যোগাযোগের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এতে অন্তত ২০ জন নিহত ও সাড়ে চার শতাধিক আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট যুদ্ধের নতুন পর্ব ঘোষণার পর এ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে উত্তরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি বিভাগকে পুনরায় মোতায়েন করেছিলেন তারা।
পেজার বিস্ফোরণের ঘটনায় লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলকে দায়ী করে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, এ হামলার প্রতিশোধ গ্রহণে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।
এ ছাড়া ইরানও ইসরায়েলের দিকে আঙুল তুলেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ানের ওয়েবসাইটে বলা হয়, পশ্চিমা শক্তি ও যুক্তরাষ্ট্র যে জায়নবাদীদের অপরাধ, গণহত্যা, গুপ্তহত্যা সমর্থন করে তা পেজার বিস্ফোরণের ঘটনা আবারও প্রমাণ করে।
মন্তব্য করুন