পেজার হলো একটি তারবিহীন যোগাযোগের ডিভাইস। এটি একটি সরল বেতার যন্ত্র, যা মেসেজ আদান-প্রদান করতে সক্ষম। ফোনের মতো এ যন্ত্রে কথা বলা যায় না।
পেজারের যান্ত্রিক গঠন মোবাইলের মতো অত জটিল নয়। ইন্টারনেটের ব্যবহারও এ যন্ত্রে করা যায় না। এটি খুব উচ্চ কম্পাঙ্ক বা অতি-উচ্চ কম্পাঙ্কের রেডিও তরঙ্গে কাজ করে। পেজারের ৪টি মূল উপাদান।
একটি অ্যান্টেনা, যা রেডিও সংকেত গ্রহণ করে, একটি রিসিভার, যা আগত বার্তাগুলোকে ডিকোড করে, একটি স্ক্রিন যেখানে সেই বার্তা দেখা যায় এবং একটি ব্যাটারি। এই যন্ত্র হাতে বা পকেটে রেখে ঘোরা যায়। পেজার একমুখী যোগাযোগের যন্ত্র, যার অর্থ এই যন্ত্রে একসময়ে হয় মেসেজ গ্রহণ করা যায় বা পাঠানো যায়। দুটো কাজ একসঙ্গে চলতে পারে না। তবে পরবর্তী সময়ে দ্বিমুখী পেজারও বাজারে আসে, যা একসঙ্গে বার্তা আদান-প্রদান করতে পারত। মোবাইল ফোন সহজলভ্য হওয়ার আগে পেজার ব্যবহারের চল ছিল। তখন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য খাতে এটির ব্যবহার দেখা যেত। মোবাইল ফোনের রকেট গতিতে উত্থানের কারণে কালের নিয়মে গুরুত্ব হারায় পেজার। ব্যবহার কমে।
এই যন্ত্র এখন বিলুপ্তপ্রায়। তবে খুব কম হলেও বিশেষ কারণে কিছু জায়গায় পেজার এখনো ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে সেসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে নেটওয়ার্কের অবস্থা খারাপ। পাশাপাশি, পেজারের মাধ্যমে যোগাযোগ অনেক বেশি নিরাপদ এবং ব্যক্তিগত হিসেবে বিবেচিত হয়। ট্র্যাক করাও সহজ নয়। আর সে কারণেই বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন বা জঙ্গি গোষ্ঠীর কাছে এখনো এ যন্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম।
একই কারণে হিজবুল্লাহ এ যন্ত্র এখনো ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি ও ব্রাজিলসহ বেশ কয়েকটি দেশে এখনো স্বল্প মাত্রায় হলেও পেজার ব্যবহার হয়।
মন্তব্য করুন