লেবাননে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোজতাবা আমানি পেজার বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন। তার একটি চোখ গলে বেরিয়ে এসেছে। অপর চোখও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। নিউইয়র্ক টাইমসের বরাতে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ লেবাননজুড়ে একের পর এক পেজার বিস্ফোরিত হতে থাকে। দেশটির প্রতিরোধ যোদ্ধারা বুঝেই উঠতে পারেননি ঠিক কী হয়েছে। হামলার পর পরই আরবি ভাষার কিছু সংবাদমাধ্যম এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে খবর প্রকাশ করে। ইসরায়েল দায় স্বীকার না করলেও দেশটির সংবাদমাধ্যম পেজার বিস্ফোরণ নিয়ে একের পর এক আপডেট দিয়ে যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, কয়েক মাস বা বছর ধরে এই হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে তারা আমানির ব্যাপারে বেশি কিছু জানতে পারেননি। পরে জানা গেল, তার আঘাত বেশ গুরুতর। তাকে চিকিৎসার জন্য তেহরানে নিয়ে আসা হবে।
তবে সৌদি মালিকানাধীন আলহাদাথ নিউজ চ্যানেল বৈরুতে তেহরানের দূতাবাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, আমানি ভালো আছেন। তার আঘাত দেহের বহিরাংশে। তিনি আশঙ্কামুক্ত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে আমানিকে দেখা গেছে। হামলার পর লেবাননের একটি রাস্তায় তাকে খুব বিপর্যস্ত দেখাচ্ছিল। তার শার্টের সামনের অংশে রক্ত লেগে ছিল।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা পেজারে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে। অভাবনীয় এই হামলা কীভাবে চালানো হয়েছে, তা নিয়ে এখনো খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ চলছে। তবে পুরো চিত্র পেতে আরও কিছু দিন সময় লেগে যেতে পারে।
কারা এবং কীভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে, তা এখনো রহস্যাবৃতই রয়েছে। মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধারা এখনো পেজার ব্যবহার করেন। এই ছোট ডিভাইসের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। পেজার বিস্ফোরণের পর বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায় এগুলো তাইওয়ান উৎপাদন করেছে। সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানায়, লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধারা তাইওয়ানভিত্তিক গোল্ড অ্যাপোলোর কাছে ৫ হাজার পেজার অর্ডার করেছিল। তবে কোম্পানি এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছে।
একযোগে চালানো এই হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের হ্যান্ডেলগুলো এ সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিওতে ভরে যায়। অভিনব কায়দায় এমন হামলার পর বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন গ্রুপের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকেও বার্তা দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন