মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় আরও বেশি মাত্রায় তৎপরতা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে একের পর এক সামরিক অ্যাসেটের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে দেশটি। দুই সপ্তাহ আগে মধ্যপ্রাচ্যের জলসীমায় ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন পাঠানোর পর, এবার সেখানে পরমাণুচালিত সাবমেরিন মোতায়েন করা হয়েছে। ইউএসএস জর্জিয়ার মোতায়েন ওই অঞ্চলে বাড়তে থাকা উত্তেজনায় নতুন মাত্রা দেবে।
ইউএসএস জর্জিয়ার মোতায়েনের বিষয়টি মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা। এর আগে ওই সাবমেরিন মোতায়েন নিয়ে খবর প্রকাশ করেছিল আল আরাবিয়া। ইরানের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধের শঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। এরই অংশ হিসেবে এবার সেখানে পরমাণুচালিত সাবমেরিন পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র।
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরান ও লেবাননের সম্ভাব্য যুদ্ধ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য। নিজেদের পরম মিত্র ইসরায়েলকে বাঁচাতে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাতেও স্বস্তি পাচ্ছে না ওয়াশিংটন। তাই গেল আগস্টে মধ্যপ্রাচ্যে গাইডেড মিসাইল সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
ইরান ও লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় তেহরানের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কমান্ডার নিহত হয়। এরপর পাল্টা হামলা চালায় লেবানন। চরম প্রতিশোধের হুমকি দিয়ে রেখেছে ইরানও। তবে এখনো পর্যন্ত ইরানের দিক থেকে তেমন কোনো হামলা বা সামরিক কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েলে ইরানের হামলার হুমকি রয়েছে।
পেন্টাগন বলছে, তাদের এমন কৌশল খুব কার্যকর হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক সামরিক অ্যাসেট পাঠিয়ে ইরানের মনস্তাত্ত্বিক জায়গাটা দখল করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই মধ্যপ্রাচ্যে জলসীমায় ইউএসএস আব্রাহাম লিংকনকে পাঠায় ওয়াশিংটন। ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্ট ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপকেও ওই অঞ্চলে উপস্থিতি বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন লয়েড অস্টিন।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেন্টকমে প্রায় ৪০ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। এটি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ১০ হাজার বেশি বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম, ডেস্ট্রয়ার, অতিরিক্ত যুদ্ধবিমানসহ বিভিন্ন ধরনের সামরিক অ্যাসেটের মোতায়েনের মাধ্যমে ইসরায়েল এবং এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে থাকা নিজেদের সেনাদের রক্ষায় সচেষ্ট হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সামরিক অ্যাসেট মোতায়েনের পাশাপাশি ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে সপ্তাহান্তে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন অস্টিন। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত ও উত্তেজনা প্রশমন নিয়ে আপাতত মনোযোগী। তবে গাজায় বার বার বেসামরিক ব্যক্তিদের ওপর হামলা নিয়েও তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মন্তব্য করুন