ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার জেরে গত বছরের ৮ অক্টোবরে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এর পর দিন হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায়। এরপর থেকে উভয়ের মধ্যে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ হয়ে আসছে। তখন থেকেই আশঙ্কা ছিল যে যুদ্ধটি একটি আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হবে। এ নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে নতুন টানাটানি দেখা দেয়।
বিশেষ করে গত মাসে লেবাননের রাজধানীতে হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর অন্যতম নেতা নিহত হলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। এরই মধ্যে তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান নেতা ইসমাইল হানিয়া গুপ্ত হত্যার শিকার হন। এর জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে হামলার প্রস্তুতি নেয় ইরান। এতে আঞ্চলিক সর্বাত্মক যুদ্ধের ভয় আরও বেড়ে যায়।
যাইহোক, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে রোববার (২৫ আগস্ট) প্রায় একশ ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলা চালায়। যদিও সংখ্যাটি নিয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেতানিয়াহুর বাহিনী দেয়নি।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে আগাম হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা বড় পরিসরে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাই তারা আগাম হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছেন।
এরপরই ইসরায়েলে একের পর এক রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার জন্য জারি করা জরুরি অবস্থা। বর্তমানে লেবানন-ইসরায়েলজুড়ে তীব্র যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।
আলজাজিরার এক বিশ্লেষণ বলছে, ইসরায়েলের ওপর রোববারের হামলা হিজবুল্লাহর একটি বৃহৎ আকারের ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়া এড়াতে ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা বলে মনে হচ্ছে। হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ইঙ্গিত দিয়েছেন, আক্রমণ সফল হয়েছে এবং তিনি ইসরায়েলি সামরিক এবং গোয়েন্দা সাইটগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে সন্তুষ্ট।
আলজাজিরার জেইনা খোদর বৈরুত থেকে জানান, ইসরায়েলি সরকার দেশটির ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা গোপন করেছে বলে নাসরাল্লাহ অভিযোগ করেছেন।
হিজবুল্লাহর কাছ থেকে স্পষ্ট বার্তা এসেছে, প্রতিশোধ এখন শেষ হয়েছে। নাসরুল্লাহর মতে, ইসরায়েলে রোববারের হামলা তার উদ্দেশ্য পূরণ করেছে। তিনি এর দ্বারা বোঝাতে চেয়েছেন, হিজবুল্লাহ পাল্টা কোনো হামলায় যেতে চায় না। ইসরায়েলও যেন চুপ থাকে।
এদিকে ১০০ বিমান হামলার পর পরিস্থিতি বলছে, ইসরায়েল আর লেবাননে হামলা করতে সংযম দেখাবে না। এটি হিজবুল্লাহ ভালোভাবে বুঝতে পেরে ভীত হয়ে পড়েছে। তাই আগামী কয়েক ঘণ্টা এবং দিনগুলো উত্তেজনাপূর্ণ। এ কয়দিনই নির্ধারণ করে দেবে যে, হিজবুল্লাহর সর্বশেষ হামলা ইসরায়েলকে পিছিয়ে রাখবে না কি নেতানিয়াহু লাল লাইন অতিক্রম করে লেবাননে মরন কামড় বসাবেন।
মন্তব্য করুন