ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দলটির সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড। বুধবার (৩১ জুলাই) এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি এ হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ড ভয়াবহ ঘটনা। এ ঘটনা পুরো মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গর্ব ও সম্মানের সর্বোচ্চ অভিব্যক্তির সঙ্গে আল কাসেম ব্রিগেড আমাদের সংগ্রামী ফিলিস্তিনি জনগণ, আমাদের আরব এবং ইসলামিক দেশগুলো ও বিশ্বের মুক্ত জনগণের কাছে ঘোষণা করছে, ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের কমান্ডার ইসমাইল আবদুল সালাম হানিয়া শাহাদত বরণ করেছেন। তেহরানে তার বাসভবনকে লক্ষ্য করে কাপুরুষ ইহুদিবাদীদের হামলায় তিনি শহীদ হন। এই নাৎসি অপরাধের প্রতিক্রিয়া হিসেবে, আমরা নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করছি-
প্রথমত,আমাদের নেতা ও যোদ্ধা আবু আল আব্দ (ইসমাইল হানিয়া) সংগ্রাম এবং ত্যাগে ভরা জীবনের পর পরবর্তী জীবনে আরোহণ করেন। পুরো জীবনে তিনি আন্দোলনের বিকাশ ও সংগ্রামের বিভিন্ন স্তরের সঙ্গে ছিলেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্পষ্ট অবদান ও চিহ্ন রয়ে গেছে। তিনি ফিলিস্তিনিদের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং প্রতিরোধ আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে, জাতির প্রচেষ্টাকে একত্রিত করতে ও জেরুজালেমের সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আল আকসা এবং এর পবিত্রতা রক্ষায় আমাদের জনগণকেব সঙ্গে নিয়ে সর্বোত্তম যুদ্ধ, আল আকসা অভিযান এবং পরবর্তী প্রতিরোধ যুদ্ধে সময়ে তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন।
দ্বিতীয়ত, ইরানের রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে হানিয়ার হত্যাকাণ্ড একটি তাৎপর্যপূর্ণ এবং বিপজ্জনক ঘটনা, যা যুদ্ধকে নতুন মাত্রায় স্থানান্তরিত করবে এবং সমগ্র অঞ্চলে এর বড় প্রভাব পড়বে। শত্রুরা তাদের আগ্রাসনের পরিধি প্রসারিত এবং বিভিন্ন অঙ্গনে প্রতিরোধের নেতাদের হত্যা ও আঞ্চলিক রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেভুল করেছে। নেতানিয়াহু জাগতিক বিভ্রান্তিতে অন্ধ হয়ে, দখলদার সত্তাকে অতল গহ্বরের দিকে চালিত করছে এবং ফিলিস্তিনি ভূমি থেকে এর পতন ও স্থায়ীভাবে নির্মূলের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছে।
তৃতীয়ত, এই ইহুদিবাদীদের বেপরোয়াতার অবসান ঘটাতে হবে এবং আরও আগ্রাসন ঠেকাতে তার হস্তক্ষেপকারী হাতকে সংযত রেখে প্রবল শত্রুকে দমন করতে হবে। ফিলিস্তিনের বিভিন্ন ফ্রন্টজুড়ে শত্রুদের ক্রমাগত অপরাধ এই অঞ্চলের সমস্ত জাতি এবং জনগণের জন্য মারাত্মক শঙ্কার বিষয়। এর ফলে এ অঞ্চলের সকলে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধকে সমর্থন করতে বাধ্য করে। এই প্রতিরোধ সমগ্র জাতির জন্য সামনের সারির প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করে, যে কারণে শত্রুরা এই অঞ্চলের জাতি ও জনগণের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আগ্রাসনের দিকে মনোনিবেশ করার জন্য এটিকে চূর্ণ ও দমন করার চেষ্টা করে আসছে।
চতুর্থত, আমাদের নেতা ইসমাইল হানিয়ার রক্ত, আজ গাজার শিশু, নারী, যুবক ও প্রবীণদের রক্তে এবং আমাদের জনগণ ও যোদ্ধাদের রক্তের সাথে মিশে আছে। আর এ বিষয়টি স্পষ্ট করে যে প্রতিরোধ ও এর নেতারা যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, মানুষের পাশাপাশি রয়েছে। এই রক্ত বৃথা যাবে না, এ রক্তের বিনিময়ে আলোকিত হবে মুক্তির পথ। গাজা, পশ্চিম তীরে এবং তার সীমানার মধ্যে, যেখানেই আমাদের যোদ্ধারা পৌঁছাবে সেখানে শত্রুরা তাদের রক্ত দিয়ে আগ্রাসনের মূল্য দেবে।
মন্তব্য করুন