গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। দেশটির এ হামলায় ৩৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে সর্বশেষ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহও রয়েছেন।
ইরানের রাজধানী তেহরানে তাকে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (৩১ জুলাই) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর সন্তান থেকে শুরু করে পরিবারের কয়েক ডজন সদস্য হারিয়েছেন তিনি।
গত জুনে হানিয়ার পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হন। গাজার শান্তি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তারা নিহত হন। এর আগে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পরিবারের আরও অন্তত ৬০ সদস্যকে হারান হানিয়াহ।
আলজাজিরা জানিয়েছে, গত এপ্রিলে তিন সন্তানকে হারান হানিয়াহ। হাজেম, আমির ও মোহাম্মাদ নামের তার তিন সন্তান গাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।
হামাস জানিয়েছে, এ ছাড়াও ইসরায়েলি হামলায় হানিয়াহের চার নাতি, তিন মেয়ে এবং আরও এক ছেলে নিহত হয়েছেন।
এর আগে আলজাজিরা জানায়, ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসমাইল হানিয়াহ গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হানিয়াহ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) থেকে তেহরানে অবস্থান করছিলেন। হামাস নেতারা যে ভবনে অবস্থান করছিলেন সেখান থেকে বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে হানিয়াহ এবং তার একজন দেহরক্ষীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
বিষয়টি এক বিবৃতিতে হামাসও নিশ্চিত করেছে। তারা বলছে, আমাদের ভাই, নেতা, মুজাহিদ, স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার তেহরানের বাসভবনে বিশ্বাসঘাতক জায়নবাদীরা হামলা করেছে। তিনি শহীদ হয়েছেন। ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ফিলিস্তিনি জনগণ, আরব ও ইসলামি জাতি এবং বিশ্বের সব স্বাধীন মানুষের কাছে শোকের দাবি করে।
গাজা উপত্যকায় হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন ইসমাইল হানিয়া। ২০০৪ সালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় শেখ আহমেদ ইয়াসিন নিহত হন। এরপর উপত্যকায় ইসমাইল হানিয়ার প্রভাব বাড়তে থাকে। এ নেতার সরাসরি রাজনীতিতে উত্থান ঘটে ২০০৬ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে। তখন মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন বিভক্ত ফাতাহ দলকে হারিয়ে চমক দেখায় হামাস। ওই নির্বাচনে সাংগঠনিক পারদর্শিতায় কর্মীদের মন জয় করেন তিনি। এর ফলশ্রুতিতে ইসমাইল হানিয়া ২০১৭ সাল থেকে হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার জনপ্রিয়তায় তিনি বারবার গোষ্ঠীটির নেতা নির্বাচিত হন।
মন্তব্য করুন