ইরানের যুদ্ধজাহাজ ‘সাহান্দ’ পুরোপুরি ডুবে গেছে। কোনোভাবে আক্রান্ত হওয়া ছাড়াই জাহাজটি বন্দরের অগভীর পানিতে উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। রোববার (৭ জুলাই) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের আব্বাস বন্দরে জাহাজটি ডুবতে শুরু করে। আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও মঙ্গলবার (৯ জুলাই) পুরো ডুবে যায়। খবর দ্য টাইমস অব ইসরায়েল ও স্কাই নিউজের।
দেশটির উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র ও সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সঙ্গে যুক্ত সংবাদ সংস্থা নুরনিউজ জানায়, সাহন্দ যুদ্ধজাহাজ সোমবার পর্যন্ত খুব কষ্টে পানির ওপর ভাসিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দিনের শেষে জাহাজটি ধরে রাখার দড়ি ছিঁড়ে তলিয়ে যায়।
এর আগে রোববার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানায়, মেরামতের সময় ঘাটে পানির অতিরিক্ত প্রবাহের কারণে ভারসাম্য হারিয়ে জাহাজটি উল্টে যায়। এটিকে পুনরায় স্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ভেতরে পানি ঢোকায় তা আর রক্ষা করা যায়নি।
ইরানের তৈরি যুদ্ধজাহাজটি ২০১৮ সালে সমুদ্রে নামে। জাহাজটি হেলিকপ্টার, টর্পেডো লঞ্চার, অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট, অ্যান্টিশিপ ফায়ারগান, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ক্ষমতার জন্য ফ্লাইট ডেক দিয়ে সজ্জিত ছিল। এটি ভূমি থেকে ভূমি এবং ভূমি থেকে আকাশে মিসাইল ছুড়ে শত্রুকে নাজেহাল করতে পারত।
জানা গেছে, ইরানের আমদানি করা অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজগুলো ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের আগের। পশ্চিমা দেশগুলো অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে নতুন অস্ত্র আমদানি করা যায়নি। কিন্তু থেমে না থেকে ইরান নিজেই নিজের অস্ত্র উৎপাদন শুরু করে। ২০১০ সালে দেশটি নিজেদের তৈরি প্রথম ডেস্ট্রয়ার লঞ্চ করে। মূলত ওই সময় থেকেই নিজেদের নৌবাহিনীর সক্ষমতাকে উন্নীত করার চেষ্টা শুরু করে তারা। কিন্তু তাদের তৈরি অস্ত্র বা যুদ্ধজাহাজ খুবই দুর্বল প্রতীয়মান হচ্ছে। কারণ এর আগে ২০২১ সালে ওমান উপসাগরে ইরানের নৌবাহিনীর জাহাজ খর্গ ডুবে যায়। সেখানে একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে গিয়েছিল জাহাজটি। এ ছাড়া সম্প্রতি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ সব আরোহী নিহত হন। তখনই ইরানের সামরিক যানের দুর্বলতা সামনে আসে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার কোনো আক্রমণের শিকার বা বৈরী আবহাওয়ায় না পড়েই জাহাজডুবি ইরানের সামরিক দুর্বলতা নির্দেশ করে। এর মানে, যুদ্ধে টিকে থাকার মতো শক্তি ইরানের যুদ্ধজাহাজগুলোর নেই।
মন্তব্য করুন