ইরানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন সংস্কারপন্থি প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান। তার নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ফলে ইরানের পররাষ্ট্রনীতি ও অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। দীর্ঘদিন ধরে দেশটির ক্ষমতা রক্ষণশীলদের হাতে থাকার পর নতুন প্রেসিডেন্ট সংস্কারপন্থি হওয়ায় এ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
শনিবার (০৬ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংস্কারপন্থি প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় তার সামনে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে নাগরিকদের নিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংস্কারপন্থি প্রার্থীর জয়ের ফলে ইরানে বাস্তববাদী পররাষ্ট্রনীতি দেখা যেতে পারে। ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি নবায়ন করতে প্রধান প্রধান বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্থবির আলোচনা নিয়ে উত্তেজনা কমতে পারে। এ ছাড়া উন্নত হতে পারে সামাজিক উদারীকরণের সম্ভাবনা।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তোহিদ আসাদি বলেন, পেজেশকিয়ানের বিজয়ের ফলে ইরানের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে ইরানের রাজনীতি অত্যন্ত জটিল ও গতিশীল। এ রাজনীতিতে প্রেসিডেন্ট কেবল একজন খেলোয়াড়।
পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে তিনি বলেন, পশ্চিমা ও যুক্তরাষ্ট্রের কোটে এখন বল। তবে এ জন্য ইরানের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তাদের পুনরায় আস্থা অর্জন করতে হবে।
তেহরানভিত্তিক বিশ্লেষক ও ফারস মিডিয়া ফ্যাকাল্টির অধ্যাপক মোস্তফা খোশচেশম বলেন, ইরানের পররাষ্ট্রনীতিতে কৌশলগত পরিবর্তন তেমন আসবে না।
তিনি বলেন, ইরানের পররাষ্ট্রনীতির ভাগ্য নির্ধারণ করে পুরো সরকার ব্যবস্থা। এতে সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও সংসদের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
অধ্যাপক মোস্তফা বলেন, নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ওপরও অনেককিছু নির্ভর করছে। যদি ট্রাম্প ক্ষমতায় আসেন তাহলে দুপক্ষের মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনা হবে এমনটা আমি আশা করি না।
জানা গেছে, ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সাবেক সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ খাতামির সরকারের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাসুদ পেজেশকিয়ান। এ ছাড়া ইরানের পার্লামেন্টে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের শহর তাবরিজে ২০০৮ সাল থেকে প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন তিনি।
সাবেক এ স্বাস্থ্যমন্ত্রী একজন স্বনামধন্য কার্ডিওলজিস্ট। তিনি তাবরিজ ইউনিভার্সিটি অব মেডিকেল সায়েন্সের সাবেক প্রধান ছিলেন। এটি ইরানের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান মেডিকেল প্রতিষ্ঠান।
পেজেশকিয়ান এর আগে ২০১৩ এবং ২০২১ সালেও তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে ২০১৩ সালে তিনি হাসেমি রাফসানজানিকে সমর্থন দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন এবং ২০২১ সালে গার্ডিয়ান কাউন্সিল তার প্রার্থিতা বাতিল করে।
মন্তব্য করুন