ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সংস্কারপন্থি প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান বিজয়ী হয়েছেন। এবার তার রাষ্ট্রক্ষমতায় বসার পালা। কিন্তু এর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির অনুমোদন প্রয়োজন।
খামেনি অনুমোদন দিলে ইরানের নবম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হবেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। নয়তো তাকে পরবর্তী সাংবিধানিক জটিলতায় পড়তে হবে। সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনের পর পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হবে। এর মধ্য দিয়ে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি।
শনিবার (৬ জুলাই) সকালে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। খবর আলজাজিরার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার প্রদত্ত ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে পেজেশকিয়ান ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।’
পার্লামেন্টের গভর্নিং বোর্ডের সদস্য আলি আকবর রঞ্জবারজাদেহ বলেছেন, পেজেশকিয়ান ও তার লোকজন প্রস্তুত থাকলে এই সপ্তাহে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য আইন প্রণয়ন সংস্থা প্রস্তুত রয়েছে। ইরানে সপ্তাহ শনিবার থেকে শুরু হয়। সে হিসেবে সাত দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নিতে পারেন।
আধা-সরকারি তাসনিম নিউজে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, পেজেশকিয়ান বর্তমানে সংসদ সদস্য। গভর্নিং বোর্ডে তার পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। আইন প্রণেতাদের অবশ্যই তা গ্রহণ করতে হবে। পেজেশকিয়ান তাবরিজ থেকে দীর্ঘদিন ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
শপথের পর নতুন রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভা গঠনের ব্যাপারে সংসদের সঙ্গে সমন্বয় করতে পারবেন। এ ব্যাপারেও তাকে খামেনির মুখাপেক্ষি হতে হবে।
উল্লেখ্য, মাসুদ পেজেশকিয়ান শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী কট্টরপন্থি সাইদ জালিলিকে হারিয়ে দ্বিতীয় দফার ভোটে বিজয় অর্জন করেন। শুক্রবার (৫ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়। গত ২৮ জুন প্রথম দফার ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় দেশটির নিয়ম অনুযায়ী এগিয়ে থাকা এ দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। প্রথম দফায় পেজেশকিয়ান ৪২ শতাংশ এবং সাইদ জালিলি ৩৯ শতাংশ ভোট পান।
দ্বিতীয় দফায় গণনা করা ৩০ মিলিয়নেরও বেশি ভোটের মধ্যে ৫৩.৩ শতাংশ ভোট পান পেজেশকিয়ান। অপর পক্ষে জালিলি পান ৪৪.৩ শতাংশ ভোট। অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পেজেশকিয়ান ১৬.৩ মিলিয়ন এবং জালিলি ১৩.৫ মিলিয়ন ভোট পেয়েছেন। এরপরই পেজেশকিয়ানের বিজয়ের খবর জানানো হয়।
এর পরপরই স্থানীয় সময় শনিবার (৬ জুলাই) ভোরে পেজেশকিয়ানের সমর্থকরা তেহরানসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় আনন্দ মিছিল বের করেন। তারা গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও চত্বরে জড়ো হয়ে জয় উদ্যাপন করছেন। এক ভিডিওতে দেখা যায়, উচ্ছ্বসিত জনতা নেচে-গেয়ে আনন্দ করছেন। অনেকে গাড়ির হর্ন বাজিয়ে গানের তালে তাল দিচ্ছেন।
মন্তব্য করুন