ইরানে আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোটের দিন শুক্রবার (৫ জুলাই) হঠাৎ দেশত্যাগ করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ। গত মে মাসে ইব্রাহিম রাইসির আকস্মিক মৃত্যুর পর ইরানে এই আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন আহমাদিনেজাদ। কিন্তু দেশটির গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমোদন আদায় করতে ব্যর্থ হন তিনি।
টানা দুবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন মাহমুদ আহমাদিনেজাদ। সাধারণ চাল-চলন কিন্তু দেশের নীতির প্রশ্নে অবিচল আহমাদিনেজাদ খুব দ্রুতই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেয়ীর সঙ্গে তার বিরোধের কারণে তৃতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেননি আহমাদিনেজাদ। রাইসির মৃত্যুর পর আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। তবে এবারও তার আশায় গুড়েবালি।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরও সুস্পষ্ট বিজয়ী পাওয়া যায়নি। তাই দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শুক্রবার মুখোমুখি হয়েছেন কট্টরপন্থি সাইদ জলিলি ও সংস্কারবাদী মাসুদ পেজেসকিয়ান। এ নির্বাচন চলমান থাকা অবস্থাতেই এবার ইরান ছেড়েছেন আহমাদিনেজাদ।
দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর কারও প্রতিই সমর্থন দেননি আহমাদিনেজাদ। সাবেক এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে। তবে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে এটা জানানো হয়নি যে, আহমাদিনেজাদ ভোট দেবেন কি না।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম রাউদাদ-২৪ এর বরাত দিয়ে লন্ডনভিত্তিক ফার্সি ভাষার নিউজ চ্যানেল ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, দেশ ছেড়েছেন আহমাদিনেজাদ। তারা বলছে, চার দিনের সফরে তুরস্ক গেছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
ক্ষমতাসীন এলিটদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সাল থেকে চড়া গলায় সমালোচনা করে যাচ্ছেন আহমাদিনেজাদ। ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াতে চাইলেও গার্ডিয়ান কাউন্সিল তার প্রার্থিতা আটকে দেয়। এরপর থেকেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আহমাদিনেজাদ। এবারও গার্ডিয়ান কাউন্সিলে খড়গ নেমে আসে তার ওপর। তাই নির্বাচনে দাঁড়াতেই পারেননি আহমাদিনেজাদ।
এদিকে তেহরান প্রদেশের দুটি ছোট শহরে নির্বাচনের দিন সকাল সকাল ভোট দিয়েছেন মাসুদ পেজেসকিয়ান ও সাইদ জলিলি। পেজেসকিয়ান শাহরি-ই-কদসের একটি স্কুলে ও জলিলি কারচকের একটি মসজিদে ভোট দেন। প্রথম দফার নির্বাচনে পেজেসকিয়ান কট্টরপন্থি জলিলির চেয়ে কয়েক লাখ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। তবে কোনো প্রার্থী প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন