জীবনভর শিক্ষার পেছনে একজন ভারতীয় যত খরচ করেন, তার দ্বিগুণ খরচ করেন বিয়ে করার বেলায়। দেশটির ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং ও পুঁজিবাজার সংস্থার রিপোর্টের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একেকটি বিয়েতে ভারতীয়রা যা খরচ করেন, তা ওই দম্পতির প্রাক-প্রাথমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনার খরচের প্রায় দ্বিগুণ।
বিশ্বে একমাত্র ভারতেই আড়ম্বরপূর্ণ বিয়েকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে একটি বিশাল বাজার। দেশটিতে বিয়েকে কেন্দ্র করে কেনাবেচা হয় প্রায় ১৩০ বিলিয়ন ডলারের, মার্কিন মুদ্রার হিসাবে যেটি প্রায় সাড়ে ১২ লাখ রুপি। এই অংক যুক্তরাষ্ট্রের বিয়ের বাজারের দ্বিগুণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে একজন মানুষের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৯০০ ডলার। রুপির হিসাবে এটি আড়াই লাখ রুপি। অর্থাৎ একেকটি বিয়েতে খরচ করা হয় মাথাপিছু আয়ের পাঁচগুণ বেশি।
ভারতে রয়েছে বিলাসবহুল বিয়ের প্রচলন। একেকটি বিলাসবহুল বিয়েতে ২০ লাখ থেকে ৩০ লাখ খরচ হয়। তবে বিয়ের গয়না, পোশাক এবং যাতায়াত ভাড়া এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। এই ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ হয় সাধারণত পাঁচ থেকে ছয়টি অনুষ্ঠান, হোটেল রুম, ক্যাটারিং, সাজসজ্জা ও বিনোদনমূলক আয়োজনের জন্য। বিয়ের মোট খরচের ২০ শতাংশ ক্যাটারিংয়ে ও ১৫ শতাংশ খরচ হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে।
দেশের এই ওয়েডিং ইন্ডাস্ট্রি বা বিয়ের বাজারকে কেন্দ্র করে রয়েছে ছোট-বড় কয়েক হাজার উদ্যোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব উদ্যোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন রীতিতে বিয়ের আয়োজন করতে সিদ্ধহস্ত। কারণ ভারতের একেক অঞ্চলে বিয়ের অনুষ্ঠান হয় একেক রীতিতে। ফলে অঞ্চলভেদে গড়ে উঠেছে নানান স্থানীয় উদ্যোক্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
অন্যদিকে, ভারতে যে পরিমাণ গয়না বিক্রি হয় তার অর্ধেকেরও বেশি ব্রাইডাল জুয়েলারি। এমনকি পোশাকের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশেরও বেশি খরচ হয় বিয়ের জন্য। এ ছাড়া দেশটিতে প্রচলন আছে ডেসটিনেশন ওয়েডিং বা বিদেশের কোনো দর্শনীয় স্থানে বিয়ের। যদিও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এটিকে নিরুৎসাহিত করেছেন। তিনি বিদেশে যাওয়ার পরিবর্তে ভারতের অভ্যন্তরেই বিয়ে করতে উত্সাহিত করেছেন ভারতীয়দের।
মন্তব্য করুন