ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হ্যাটট্রিক করতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। রোববার (০৯ জুন) সন্ধ্যায় শপথ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তার হ্যাটট্রিক হবে। এ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে হ্যাটট্রিক করতে চলেছেন তিনি।
নতুন এ রেকর্ডের শুরুটা মোদির জন্য মোটেও এতটা সুন্দর ছিল না। একদম সাধারণের কাতার থেকে এ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন তিনি। এ জন্য পাড়ি দিতে হয়েছে দীর্ঘ পথ। মোদির এ ইতিহাস যেন কোনো রূপকথার কোনো গল্পকেও হার মানায়। তার উত্থান ও সফলতা বিস্মিত করেছে অনেককেই।
গুজরাটের ভাদনগরে এক দরিদ্র পরিবারে ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন নরেন্দ্র মোদি। ছোটবেলা বাবার চায়ের দোকানে সহযোগিতার মধ্যে দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৭০ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির মূল সংগঠন আরএসএস নাম লেখান মোদি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন তিনি। এরপর ১৯৮৫ সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়।
মাত্র তিন বছরের মাথায় গুজরাট বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হন। এরপর ১৯৯৫ সালে কেন্দ্রীয় বিজেপির সম্পাদক মনোনীত হন। এরপর দিল্লি, হরিয়ানা ও হিমাচলের দায়িত্ব পান তিনি। ২০০১ সালে কেশুভাই প্যাটেল অসুস্থতার জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন। এরপর ওই পদে স্থলাভিষিক্ত হন মোদি। এ ঘটনার মাত্র এক বছরের মাথায় গুজরাটে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা হয়। এ ঘটনায় ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন। গুজরাটের এ দাঙ্গার জন্য অনেকে মোদিকে দায়ী করে থাকেন।
এ ঘটনার পর ২০০২ সালে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মোদি আবারও রাজ্যের ক্ষমতায় আসেন। এরপর আরও দুদফায় মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তার এ সাফল্য ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিরাট ভূমিকা পালন করে। এর জেরে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়েছিলেন।
এভাবে করে চা বিক্রেতা থেকে বিজেপির হয়ে প্রধানমন্ত্রীর আসন অলংকৃত করেন মোদি। এরপরই জানা যায় তিনি বিবাহিত। বারানসিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় যশোদাবেন নামের এক নারীকে স্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
টানা এক দশক ক্ষমতায় থেকে ভারতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বচ্ছ ও আধুনিক ভারত গড়ে তুলতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। ভারতকে বিশ্বের পঞ্চম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার কৃতিত্বও তার ঝুলিতে। অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ব্যপ্তি ছাড়িয়ে বিশ্ব পরিমণ্ডলেও নিজের ব্যপ্তি ছড়িয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন