ভারতের লোকসভা নির্বাচনে জেলে বসেও জয়ী হয়েছেন কাশ্মীরের জনপ্রিয় নেতা ও সাবেক বিধায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ আবদুল রশিদ। প্রায় চার লাখ ভোটে জয় পেয়েছেন তিনি। কাশ্মীরের বারামুল্লা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রশিদ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ার শেখ আবদুল রশিদ জম্মু ও কাশ্মীরের একজন সাবেক বিধায়ক। তিনি জম্মু ও কাশ্মীর আওয়ামী ইত্তেহাদ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘পৃষ্ঠপোষক’। পাঁচ বছর ধরে ভারতের তিহার জেলে আটক রয়েছেন এ নেতা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, কারাবন্দি নেতা শেখ আবদুল রশিদ নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ২০ মে পঞ্চম দফার ভোটের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে তার হয়ে প্রচার শুরু করেছিলেন তার দুই ছেলে। অবশেষে নির্বাচনে জিতেও গেলেন তিনি।
রশিদের ছেলে আবরার রশিদ বলেন, এই জনাদেশ মানুষের জয়। বাবার নির্বাচনী প্রচারণা সমালেছেন আবরার। এ জন্য কত টাকা ব্যয় হয়েছে তাও জানিয়েছেন তিনি। আবরার বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় মাত্র ২৭ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে।
রশিদের ছেলেন বলেন, জনগণের ভোট প্রমাণ করে দেয়, তিনি আসলে নিরাপরাধ। তাকে জেলে দ্রুত জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। আবরার বলেন, তার বাবা যখন প্রথম ভোটে লড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন পাশে কেউ ছিল না। ধীরে ধীরে বহু মানুষ এগিয়ে আসেন। ক্রমে যখন তিনি মিছিল শুরু করেন তখন হাজার হাজার মানুষ তার সঙ্গে হাঁটতে থাকেন।
এদিকে ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগেই নিজের পরাজয় স্বীকার করে নেন ওমর আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ভোটাররা তাদের মত দিয়েছেন। গণতন্ত্রে এটাই সবকিছু। তিনি তাকে অভিনন্দনও জানান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি না যে এ জয়ের ফলে রশিদ তাড়াতাড়ি জেল থেকে মুক্তি পাবেন। উত্তর কাশ্মীরের মানুষের জনপ্রতিনিধি পাওয়ার যে অধিকার তাও এতে পূরণ হবে না। তবে ভোটাররা তাদের মতামত দিয়েছেন, গণতন্ত্রে এটাই আসল কথা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৭ বছর বয়সী শেখ রশিদ উত্তর কাশ্মীরের লাঙ্গতে আসনের দুবারের সাবেক বিধায়ক। মূলধারার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি নিহত হুরিয়ত নেতা তথা জেকেপিসির প্রতিষ্ঠাতা আবদুল গনি লোনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।
জনপ্রিয় নেতা শেখ আবদুল রশিদ জেলে থেকেও এভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ও জিতে যাওয়ার ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন ভারতের নির্বাচন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন