ভারতে নির্বাচনের পর এখন চলছে ক্ষমতা দখলের হিসাব। সরকার গঠনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো রাজনৈতিক দলই। ফলে জোটের ভাবনা ভাবছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি এবং বিরোধী দল কংগ্রেস। এমন সব সমীকরণের মধ্যে নিজেদের নেতা চূড়ান্ত করেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। বুধবার (০৫ জুন) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বিজেপি জানিয়েছে, নয়াদিল্লিতে এনডিএ জোটের বেঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে নরেন্দ্র মোদি জোটের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মোদিজির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার ভারতের দরিদ্র, মহিলা, যুবক, কৃষক, শোষিত, বঞ্চিত এবং ভুক্তভোগী নাগরিকদের সেবা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বুধবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এনডিএ জোটের নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ শিং, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও জেডিইউ প্রধান নীতিশ কুমার এবং টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডুসহ অনেকে।
ভারতের এ নির্বাচনে কিংমেকার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন নীতিশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নাইডু। তাদের দুজনকে নিয়েই ক্ষমতায় বসার স্বপ্ন দেখছে বিজেপি জোট।
ভারতের সংবিধান অনুসারে, দেশটিতে মোট ৫৪৫টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭২ আসন। এ নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে ২৪০টি আসন পেয়েছে। এছাড়া তাদের নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পেয়েছে ২৯২ আসন।
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে বিজেপি ৩২ আসন কম পেয়েছে। এরমধ্যে টিডিপি আর জেডিইউর দখলে রয়েছে ২৮ আসন। ফলে সরকার গঠনে জোটের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন তারা।
এনডিএ জোটের পার্লামেন্ট সদস্য সঞ্জয় কুমার বার্তাসংস্থা পিটিআইকে বলেন, বৈঠকে সবাই নিজ নিজ মতামত তুলে ধরেছেন। জনগণকে তৃতীয়বারের মতো ম্যান্ডেট দেওয়ায় দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
এনডিএ যখন নিজেদের নেতা নির্বাচনের বৈঠকে বসেছে ঠিক একই সময় বৈঠক করেছে বিরোধীদের জোট ইন্ডিয়া। জোটের বৃহৎ শরিক কংগ্রেসের প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে বাসভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে এনডিএ জোটকে থামানোর কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দিল্লিতে এ বৈঠকে কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, তার ছেলে রাহুল গান্ধী, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, ভারতশাসিত কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আসন সংখ্যার হিসাব অনুসারে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এনডিএ জোট সরকার গঠন করতে চলেছে। আর আবারও দেশটির প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। আগামী শনিবারই তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। ভারতে জওহরলাল নেহরুর পরে তিনিই দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে টানা তিনবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, বুধবার লোকসভা নির্বাচনের ফল পর্যালোচনা নিয়ে বৈঠকে বসেন নরেন্দ্র মোদি। সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটি ছিল মন্ত্রিপরিষদের শেষ বৈঠক তার। বৈঠকে শনিবার শপথ গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে প্রথমে রোববার মোদির শপথ অনুষ্ঠানের তারিখ ঠিক করা হয়। পরে সিদ্ধান্ত বদল করা হয়। এরপর শনিবার শপথের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
মন্তব্য করুন