ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়েছে ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস। দেশটিতে টানা তিনবার ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি। অন্যদিকে বিরোধীদের জোট কংগ্রেসের সামনে এখনো ক্ষমতায় আসার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়নি। জোটের বড় দল কংগ্রেস এখনো অস্বীকার করেনি যে, তারাও জোটের পক্ষ থেকে সরকার গঠনের দাবি জানাতে পারে। বুধবার (০৬ জুন) এ নিয়ে বৈঠকের কথা জানিয়েছেন দলের অন্যতম নেতা রাহুল গান্ধী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দিল্লিতে এআইসিসি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে বিষয়টি নিয়ে জোটের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান।
বৈঠকে রাহুল গান্ধীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, এনডিএ আপাতত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও জোটে কংগ্রেসের একাধিক সাবেক রাজনৈতিক সঙ্গী রয়েছে। ফলে তারা বিরোধী দলেই থাকবে নাকি সরকার গঠনের চেষ্টা চালাবে।
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা জোটের সঙ্গে শিগগিরই আলোচনায় বসব। বুধবার এ নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা হবে। আমরা জোটের শরিকদের মর্যাদা দেই। তাদের মতামত না নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
রাহুল গান্ধী বলেন, জোট যে সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস সেই পথেই হাঁটবে।
সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে নতুন রাজনৈতিক সঙ্গী খোঁজার বিষয়ে ইংগিত দেন।
খাড়গে বলেন, যতক্ষণ না আমরা জোটের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করি ততক্ষণ আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা এখনই আমাদের সব কৌশল ফাঁস করে দিলে তো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সতর্ক হয়ে যাবেন।
এর আগে মঙ্গলবার (০৪ জুন) ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের মতো সংসদের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। তবে এ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ।
ভারতের সংবিধান অনুসারে, দেশটিতে মোট ৫৪৫টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭২ আসন। এ নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে ২৪০টি আসন পেয়েছে। এছাড়া তাদের নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পেয়েছে ২৯২ আসন।
নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে বিজেপি ৩২ আসন কম পেয়েছে। এরমধ্যে টিডিপি আর জেডিইউর দখলে রয়েছে ২৮ আসন। ফলে সরকার গঠনে জোটের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন তারা।
আসন সংখ্যার হিসাব অনুসারে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এনডিএ জোট সরকার গঠন করতে চলেছে। আর আবারও দেশটির প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। আগামী শনিবারই তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। ভারতে জওহরলাল নেহরুর পরে তিনিই দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে টানা তিনবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, বুধবার লোকসভা নির্বাচনের ফল পর্যালোচনা নিয়ে বৈঠকে বসেন নরেন্দ্র মোদি। সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটি ছিল মন্ত্রিপরিষদের শেষ বৈঠক তার। বৈঠকে শনিবার শপথ গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে প্রথমে রোববার মোদির শপথ অনুষ্ঠানের তারিখ ঠিক করা হয়। পরে সিদ্ধান্ত বদল করা হয়। এরপর শনিবার শপথের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
মন্তব্য করুন