ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। খবর এনডিটিভির।
দেশটিতে বর্তমানে কী পরিস্থিতি বিরাজ করছে তার বর্ণনায় স্থানীয়রা বলছেন, উত্তর ভারত যেন উনুনে বসানো তপ্ত কড়াই। সঙ্গে আগুন বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বাসিন্দাদের টিকে থাকাই দায়।
দিল্লির মুঙ্গেশপুরের আবহাওয়া কেন্দ্র বুধবার (২৯ মে) দুপুর আড়াইটায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করে। কেন্দ্রটি বলছে, আজই সর্বকালের সবচেয়ে উষ্ণতম দিন কাটাচ্ছেন দিল্লিবাসী।
এ ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলও তীব্র তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করছে। এর মধ্যে মরুভূমির রাজ্য রাজস্থানে ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, হরিয়ানায় ৫০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
পিছিয়ে নেই বিহারও। এখানকার তাপমাত্রা ৪৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নজফগড়ের তাপমাত্রা ৪৯.৮ ডিগ্রি, মধ্যপ্রদেশের ঝাঁসিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৯ ডিগ্রি। এ ছাড়া আরও কিছু অঞ্চলে কম-বেশি তাপপ্রবাহ অনুভূত হচ্ছে। সঙ্গে তীব্র রোদ সব বয়সের মানুষকে কাবু করে রেখেছে।
এদিকে কিছুটা স্বস্তির পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর। তাদের মতে, আরব সাগর থেকে আর্দ্র বাতাসের প্রবেশের কারণে দক্ষিণ রাজস্থানের বারমের, যোধপুর, উদয়পুর, সিরোহি ও জালোরে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রার পতন রেকর্ড করা হয়েছে। যা উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাপপ্রবাহ হ্রাসের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
নিউমেরিক্যাল ওয়েদার প্রেডিকশন ডেটা বলছে, এই হ্রাস প্রবণতা উত্তর দিকে আরও প্রসারিত হবে এবং ৩০ মে থেকে তাপপ্রবাহের অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে শিথীল হয়ে আসবে।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার থেকে বঙ্গোপসাগরের আর্দ্র বাতাস বয়ে আসবে। এ প্রবাহের ফলে উত্তরপ্রদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে পারে।
গরমের পরিস্থিতি যখন এ পর্যায়ে তখন চাপে পড়েছে বিদ্যুৎ খাত। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজধানীতে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে ৮,৩০২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা দেখা দিয়েছে।
এ চাহিদা স্মরণকালের মধ্যে উচ্চতম। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, গরম থেকে বাঁচতে মানুষ বেশি পরিমাণে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। গরিব ও মধ্যবিত্তরাও বেশিক্ষণ ফ্যান চালু রাখছেন। এ ছাড়া পানি ঠান্ডা করতেও ফ্রিজ উচ্চশক্তিতে চালাতে হচ্ছে।
সাধারণত দিল্লিতে মাত্র চার মাস বাদে সারা বছরই গরম থাকে। প্রতিবছরই তীব্র তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে এ তাপপ্রবাহ দীর্ঘ হচ্ছে। এর জন্য জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে দায়ী করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন