ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। গত রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করছে ইউরোপের দেশ বেলারুশ। শনিবার (২৫ মে) আরটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের কাছ থেকে কেনা হেলিকপ্টারটি মেরামত করতে পারেনি ইরান। এটি রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে ভূমিকা রেখেছে।
শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট নয়, একজন ব্যক্তি হিসেবে আমি বলব, এটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের জঘন্য ও ঘৃণ্য অবস্থানের কারণে।
তিনি বলেন, আমি প্রথমত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কথা বলতে চাচ্ছি। জাহাজ, বিমান বা হেলিকপ্টারের বিরুদ্ধে তাদের নিষেধাজ্ঞা আরোপের কোনো অধিকার নেই। রাইসির হেলিকপ্টার তারা তাদের কোম্পানিকে মেরামত করতে দেয়নি। এটা তাদেরই দোষ।
এর আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের দিকে আঙুল তোলেন। ইরানের ওপর মার্কিনদের দীর্ঘদিন ধরে থাকা নিষেধাজ্ঞায় বিমান খাতে নাজুক পরিস্থিতির কারণে এমন ঘটেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
আলজাজিরা জানায়, রোববারের (১৯ মে) এ দুর্ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় বর্ণনায় ‘হার্ড ল্যান্ডিং’ বলা হয়। কিন্তু এতে হেলিকপ্টারটির অবস্থা কী হয়েছে তা তখন বলা হয়নি। এ পরিভাষায় কী বোঝানো হয়েছে তাও স্পষ্ট করা হয়নি।
যখন ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা নিশ্চুপ তখনই দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছিল, হেলিকপ্টারটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিন্তু পরে যোগাযোগ স্থাপন নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল।
এরপর ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়, দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেখান থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে। হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তারাই ওই ফোনকল করেছিলেন। এ বর্ণনা দিয়ে প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের মৃত্যু বা হতাহতের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়। ইরানের কর্মকর্তারা বলেন, এর মানে হচ্ছে দুর্ঘটনায় পড়া হেলিকপ্টারের আরোহীরা বেঁচে আছেন।
কিন্তু শেষমেশ হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। জানানো হয়, এ দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতিসহ সবাই মারা গেছেন।
মন্তব্য করুন