আরব সাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়ের’ শক্তি বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি আরও তীব্র হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হবে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। রাজ্যগুলো হলো গুজরাট, কেরালা ও কর্ণাটক।
সাগর উত্তাল থাকায় গুজরাট, কেরালা, কর্নাটক এবং লক্ষ্মদ্বীপের জেলেদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইএমডি।
অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় বর্তমানে ভারতের গোয়া উপকূল থেকে প্রায় ৬৯০ কিলোমিটার পশ্চিমে, মুম্বাই থেকে ৬৪০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পোরবন্দর থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। এর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার। বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এরই মধ্যে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে তিন রাজ্যে।
আইএমডি সতর্ক করেছে, ঝড়ের কারণে কর্নাটক, গোয়া ও মহারাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে ভারি বৃষ্টিপাত এবং প্রবল বাতাস বয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের প্রভাবে সুউচ্চ ঢেউ এবং প্রবল বাতাসের কারণে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত গুজরাটের তিথাল সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব আগামী ৩-৪ দিন থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এ সময় হতে পারে বজ্রপাতও। আগামী ৩-৪ দিন সাগরের মধ্যে হাওয়ার গতিবেগ হতে পারে ১৩৫-১৪৫ কিলোমিটার থেকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। গুজরাটের জেলেদের ১৪ জুন পর্যন্ত আরব সাগরে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। এরই মধ্যেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে গুজরাটের উপকূলবর্তী ২২টি গ্রামের ৭৬ হাজার মানুষকে। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতকর্তা জারি করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরসহ উত্তর ভারত মহাসাগরে তৈরি হওয়া সমস্ত ঘূর্ণিঝড়ের জন্য ২০২০ সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা নামটি গ্রহণ করেছে।
গত মে মাসে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারে আঘাত হানে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। তুলনামূলক বাংলাদেশে ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও তাণ্ডব চালায় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের দাবি, দেশটিতে অন্তত চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে মোখার তাণ্ডবে। তবে কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি দেশটির ক্ষমতায় থাকা জান্তা সরকার।
এর আগে ২০০৮ সালে মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের তাণ্ডবে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল, তারপর থেকে মোখা দেশটিতে আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।
মন্তব্য করুন