চাকরি করেন পুলিশের কনস্টেবল পদে। চার বছরে তার চাকরি থেকে বেতন বাবদ আয় মাত্র ১১ লাখ টাকা। কিন্তু তার অ্যাকাউন্টে রয়েছে কোটি টাকা। বান্ধবীকে উপহার দিয়েছেন প্রায় ১২ লাখ টাকার গাড়ি। সঙ্গে ২১ লাখ টাকা হাতখরচ দিয়েছেন প্রেমিকাকে। পুলিশ যেন খুঁজে না পায় এ জন্য গাড়ির রেজিস্ট্রেশনে ব্যবহার করা হয়েছে ভুয়া ঠিকানা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর আগে দুর্নীতি দমন কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে তার টাকার উৎস।
পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি করে কোটিপতি বনে গিয়েছেন মনোজিত বাগীশ। ঘটনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের। মনোজিত এখন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের টক অব দ্য বাহিনী। বীরভূমের রামপুরহাট থানায় দায়িত্ব পালন করা এই কনস্টেবল কীভাবে এত টাকার মালিক হলেন, সেই রহস্য এখনো অজানা।
রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা সূত্রের বরাত দিয়ে টিভি নাইনের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি কনস্টেবল মনোজিত বাগীশ প্রায় ১ কোটি টাকার বড় একটি অংশ ট্রান্সফার করেছেন নিজের এক বান্ধবীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এ ছাড়া প্রায় ২১ লাখ টাকা ওই বান্ধবীর অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন তিনি। এ ছাড়া সেই বান্ধবীকে ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাড়িও কিনে দিয়েছিলেন মনোজিত।
জানা গেছে, বান্ধবীকে উপহার দেওয়া ওই গাড়ির রেজিস্ট্রেশনে ঠিকানা ভুল দেওয়া হয়েছিল। যদিও কনস্টেবলের ওই বান্ধবীর এখনো হদিস মেলেনি। বান্ধবীর খোঁজ পাওয়া গেলে, দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন দুর্নীতি দমন শাখার তদন্তকারী অফিসাররা। তবে মনোজিতের বান্ধবীর ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী দীপঙ্কর কুন্ডু। তিনি জানান, বান্ধবীর নাম বুলা কর্মকার। তার গাড়ির লাইসেন্সে যে ঠিকানা দেওয়া রয়েছে, সেই ঠিকানায় গিয়েও বুলাকে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, ওই পুলিশ কনস্টেবলের ৭৩ লাখ টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজিটেরও সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। মনোজিতের এই বিপুল সম্পত্তি কীভাবে হলো, তা জানার চেষ্টা করবেন রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখার তদন্তকারী অফিসাররা। বিশেষ করে যখন একজন কনস্টেবল হিসেবে ওই ব্যক্তির চার বছরে বেতন বাবদ আয় হওয়ার কথা মাত্র ১১ লাখ টাকা। সে ক্ষেত্রে কীভাবে তার সম্পত্তির পরিমাণ ওই চার বছরে ১ কোটি টাকার ওপরে পৌঁছাল, তা খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
আদালতের নির্দেশে রামপুরহাট থানার কনস্টেবল মনোজিত বাগীশ আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুর্নীতি দমন শাখার হেফাজতে থাকবেন।
মন্তব্য করুন