ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ২৬ পর্যটক নিহত হয়েছেন। হামলার পর কড়াকড়ি আরোপ করেছে প্রশাসন। ফলে ঘটনাস্থল থেকে অর্ধশত কিলোমিটারেরও বেশি দূরে অবস্থান করছেন সাংবাদিকরা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবিসির সাংবাদিক ইয়োগতা লিমায়ে বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার স্থান থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন সাংবাদিকরা। নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নির্দেশে হামলাস্থল ও আশেপাশের হাসপাতালে প্রবেশে বাধার মুখে পড়েছেন মিডিয়া কর্মীরা।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মিডিয়াকে এই এলাকায় প্রবেশ না দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নির্দেশ রয়েছে। যদিও সাধারণ নাগরিকদের চলাচলে কোনো বাধা নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলায় আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা চলছে শ্রীনগরের নিকটবর্তী হাসপাতালে। কিন্তু সাংবাদিকদের জন্য সেখানে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। গত রাতেই কয়েকজন সাংবাদিক নিরাপত্তা বলয় কার্যকর হওয়ার আগে ঘটনাস্থলের কিছু ছবি ও ভিডিও তুলতে পেরেছিলেন। স্থানীয় এক ফটোসাংবাদিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের ড্রোন ব্যবহার করেও এলাকার ছবি তোলা যাচ্ছে না। সবদিকে সেনা ও পুলিশের টহল রয়েছে।
২০১৯ সালে ধারা ৩৭০ প্রত্যাহার ও রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকেই কাশ্মীরে সাংবাদিকতা ক্রমাগত সংকুচিত হচ্ছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, স্বাধীন প্রতিবেদনের জন্য এখন নিয়মিতভাবে সরকারি অনুমোদনের ওপর নির্ভর করতে হয়। গত পাঁচ বছরে কাশ্মীরি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ গল্প প্রকাশের অভিযোগে একাধিক মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে।
প্রেস ফ্রিডম সূচকে ভারতের অবস্থান নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)। সংস্থাটি বলেছে, কাশ্মীরে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা রোধে আইনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এই অভিযোগগুলো খারিজ করে বলেছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কিছু বিধিনিষেধ জরুরি।
পেহেলগামের এক বাসিন্দা বলেন, মিডিয়াকে ঢুকতে না দিলে সত্যি কথা বিশ্ব জানতে পারবে না। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন আমাদের বাস্তব অবস্থা বুঝতে পারে। অন্যদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখতে চেয়ে বলেন, তদন্তের সংবেদনশীল পর্যায়ে তথ্য ফাঁস রোধেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন