রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জড়ো যাত্রায়’ অংশ নিয়েছিলেন ২২ বছরের তরুণী হিমানি নারওয়াল। এমনকি সেই যাত্রার একাধিক ছবি ও ভিডিওতে রাহুলের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় দেখা যায় তাকে। একারণে সামাজিক মাধ্যমে বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন এই তরুণী। কংগ্রেসের তৃণমূলে তাকে নিয়ে সম্ভাবনা দেখছিলেন অনেকে। তবে সেই সম্ভাবনার শেষ হলো বেশ নির্মমভাবেই।
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের এ তরুণ কংগ্রেস নেত্রী নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। শুক্রবার রোহতকের সাম্পলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি পরিত্যক্ত নীল স্যুটকেসে পাওয়া যায় হিমানির মৃতদেহ। এঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমেগুলো জানিয়েছে, পুলিশ ধারণা শ্বাসরোধে হিমানিকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর তার মরদেহ স্যুটকেসে ভরে ফেলে দেওয়া হয়। এঘটনায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে দিল্লি থেকে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার যুবক কংগ্রেস নেত্রীর প্রেমিক বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমেগুলো।
সোমবার হরিয়ানা পুলিশের তরফে জানানো হয়, রোববার গভীর রাতে দিল্লি থেকে দুই যুবককে আটক করে হরিয়ানার রোহতকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর অপরজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের সঙ্গে হিমানীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। হিমানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ওই যুবককে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ নিয়েছিলেন। সেই রাগেই তাকে খুন করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
যে ট্রলিব্যাগ থেকে হিমানীর লাশ উদ্ধার হয়, সেটি কংগ্রেস নেত্রীর বাড়ি থেকেই নেওয়া হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, হিমানীকে তার নিজের বাড়িতেই খুন করা হয়েছে।
হিমানীর মা সবিতা বলেন, ‘খুনি পরিচিত কেউ। তিনি হয় দলের কেউ, অথবা তিনি আমাদের আত্মীয়। হিমানীর বন্ধুও কেউ হতে পারেন। কারণ তারাই বাড়িতে আসতে পারেন। আমি নিশ্চিত কেউ আমার মেয়ের সঙ্গে খারাপ কিছু করতে চেয়েছিল। তাই মেয়ে প্রতিবাদ করে। আর সেই কারণেই এ ঘটনা ঘটে।’
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, হত্যার আগে হিমানীকে ব্যাপক মারধর করা হয়। তার হাড়গোড় ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। গলায় স্কার্ফ জড়ানো ছিল হিমানীর। এটা থেকে পুলিশের সন্দেহ শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তাকে।
এদিকে হিমানী নারওয়ালের হত্যাকাণ্ডে শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতারা। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা এই ঘটনার নিন্দা করে বলেছেন, এই ঘটনা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার কলঙ্ক। উচ্চপর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন