ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেছেন। দুই দিনের এই সফরে বাণিজ্য, শুল্ক, অভিবাসন, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির টেসলার সিইও ইলন মাস্কের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে।
এক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যে ওয়াশিংটনে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডের সাথে বৈঠক করেছেন।
এই সফর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গভীর করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। গত মাসে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে এটিই প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক।
ট্রাম্প-মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক যেসব বিষয় গুরুত্ব পাবে শুল্ক ও বাণিজ্য ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে, যা ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য উদ্বেগের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি এই শুল্ক নীতির প্রভাব কমানোর জন্য আলোচনা করবেন এবং ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপায় নিয়ে কথা বলবেন।
অভিবাসন নীতি ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি ভারতীয় শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ উত্থাপন এবং এই নীতির প্রভাব কমানোর জন্য আলোচনা হবে।
প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা দুই নেতা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় এবং যৌথ নিরাপত্তা উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করবেন। ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি আমদানিতে আগ্রহী।
জ্বালানি ও পরিবেশ জ্বালানি নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহযোগিতা এই বৈঠকের অন্যতম বিষয়। ভারত মার্কিন প্রাকৃতিক গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি সম্পদ আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাইবার নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হবে। ইলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠকে প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ে দুই নেতা আলোচনা করবেন। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় ইউক্রেন সংকট, পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে। দুই নেতা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সহযোগিতা জোরদার করবেন।
গত তিন দশক ধরে আমেরিকার প্রেসিডেন্টরা ভারতের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। চীনের উত্থানের মুখে ভারতকে একটি প্রাকৃতিক মিত্র হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ট্রাম্প বাণিজ্য নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিকে তিনি সবচেয়ে বড় শুল্ক অপব্যবহারকারী বলে অভিহিত করেছেন।
এদিকে মোদি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে সক্রিয় ছিলেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মোদি ট্রাম্পকে তার রাজ্য গুজরাটে এক লাখেরও বেশি মানুষের উপস্থিতিতে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম উদ্বোধন করতে আমন্ত্রণ জানান।
চলতি বছরের শেষের দিকে ট্রাম্প কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে ভারত সফর করতে পারেন। কোয়াড হলো অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের চারপক্ষীয় জোট।
মন্তব্য করুন