কথায় আছে ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন। এবার যেন এ ঘটনার বাস্তব প্রমাণ মিলেছে। এক ভিখারিনির বালিশে মিলেছে দু’লাখ রুপি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ লাখ টাকা)। এতে হতবাক হয়ে গেছেন পুরো গ্রামবাসী।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছেঁড়া বালিশের নিচে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দেখে হতবাক হয়ে পড়েন গ্রামবাসী। তোষকের নিচেও মেলে বান্ডিল বান্ডিল ৫০ থেকে ১০০ টাকার নোট। এরপর হাঁড়িতে হাত দিতেও ঝনঝন করে ওঠে খুচরো কয়েন। সব মিলিয়ে টাকা গুনতে পার হয় পুরো দিন। পাওয়া যায় দুই লাখ ২৩ হাজার টাকা।
বিচিত্র এ ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার বেলিয়া চকপাড়ায়। সেখানে ৭০ বছরের আসিনুর বেওয়া নামের এক ভিখারিনির কাছে এ টাকা মিলেছে। স্বামী ও চার সন্তান নিয়ে এক সময় সুখের সংসার ছিল তার। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের বিয়ে দিয়ে একাই থাকতেন ভাঙাচোরা ঘরে।
এলাকাবাসী জানান, আসিনুর ভিক্ষা করে দিন কাটাতেন। কখনও ভিক্ষা না পেলে হাসতে হাসতে বলতেন, ‘রাজার ঘরে যে ধন আছে, আমার ঘরেও সে ধন আছে।’ কিন্তু কেউই তার কথায় কান দিতেন না।
রোববার আসিনুরের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী গ্রামবাসী তার ঘরে গিয়ে টাকা খোঁজা শুরু করলে চোখ কপালে ওঠে সবার। ছেঁড়া বালিশ, কাপড়ের পুঁটুলি, বাক্স- যেখানে হাত দিচ্ছেন, সেখান থেকেই বেরিয়ে আসছে টাকা! ১, ২, ৫ টাকার কয়েন থেকে শুরু করে ৫০, ১০০ টাকার নোট- সব মিলিয়ে মোট টাকার পরিমাণ দুই লাখ ২৩ হাজার টাকা।
গ্রামবাসী জানান, আসিনুর প্রায়ই বলতেন, তাঁর মৃত্যুর পর যেন তার জমানো টাকা মসজিদ, ইদগাহ বা গোরস্তানে দান করে দেওয়া হয়। কিন্তু ভিখারিনির আবার জমানো টাকা! তাই কেউই তার কথায় বিশ্বাস করেননি।
আসিনুরের মেজো ছেলে আবুল হোসেন এবং বড় বৌমা সাইফুন বেওয়া মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামে আসেন। তারা জানান, মা যে এত টাকা জমিয়ে রেখেছিলেন, তা তাদের জানা ছিল না।
আবুল বলেন, আমি পরিবার নিয়ে অন্য গ্রামে থাকি। মাকে নিয়মিত দেখতে পারতাম না। গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে মায়ের ঘর থেকে জমানো টাকা পাওয়া গেছে। মায়ের ইচ্ছা অনুযায়ী এই টাকা মসজিদে দান করা হবে।
স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকা জমানোর গল্প শুনেছিলাম। এ বার নিজের চোখে দেখলাম!’
মন্তব্য করুন