মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সপ্তাহে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হোয়াইট হাউস সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়ায় এবার ভারতীয় নিয়ে একটি মার্কিন সামরিক বিমান রওনা হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এ আমন্ত্রণের তথ্য সংবাদমাধ্যমে এলো।
গত ২৭ জানুয়ারি ট্রাম্প মোদির সাথে কথা বলেন। তখন তিনি অভিবাসন নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া ভারতের আরও বেশি আমেরিকান-তৈরি নিরাপত্তা সরঞ্জাম কেনার এবং ন্যায্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের গুরুত্বের ওপর জোর দেন ট্রাম্প।
চীনকে মোকাবিলা করার প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে এবং নাগরিকদের জন্য দক্ষ কর্মী ভিসা পাওয়া সহজ করতে আগ্রহী মোদির দেশ। তেমনি মার্কিন পণ্যের ওপর ভারতের উচ্চ শুল্ক আরোপের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প অতীতে যে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন, তা এড়াতেও আগ্রহী ভারত।
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৩-২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্য ১১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যেখানে ভারতের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ৩২ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি সি-১৭ উড়োজাহাজ ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির অভিবাসন ও কাস্টমসবিষয়ক সংস্থা ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)।
মার্কিন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ১৮ হাজার ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে। এরই মধ্যে প্রথম ব্যাচের অভিবাসীদের বহনকারী উড়োজাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের একটি অজ্ঞাত অঙ্গরাজ্য থেকে ছেড়ে গেছে। তবে কোন রাজ্য থেকে বিমানটি উড্ডয়ন করেছে, ভারতের সেটি কোথায় অবতরণ করবে এবং এতে কতজন ভারতীয় রয়েছেন— এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। আইসিই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উড়োজাহাজটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের ভূখণ্ডে পৌঁছাবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিপুলসংখ্যক ভারতীয় অভিবাসী আছেন। গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অভিবাসীদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যা মেক্সিকোর, এরপর এল সালভাদর ও ভারতের অবস্থান। দেশটিতে বর্তমানে আনুমানিক ৭ লাখ ২৫ হাজার ভারতীয় অভিবাসী নথিবিহীন অবস্থায় রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নথিবিহীন অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তের পর গত মাসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, যারা বৈধ অনুমোদন ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তাদের দেশে ফেরত নিতে ভারত প্রস্তুত।
মন্তব্য করুন