ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় সরকারি হাসপাতালে আলোচিত নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় রায় দিয়েছেন আদালত। তবে এ রায়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মমতা বলেন, তিনি এখনো ফাঁসির দাবিতে অনড়। যাবজ্জীবন না হয়ে ফাঁসির সাজা হলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতেন তিনি। এ ছাড়া এ সময় তিনি সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন।
সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ রায়ে তিনি খুশি নন। জয়নগর, ফারাক্কা এবং গুড়াপের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৩টি ক্ষেত্রেই পুলিশ তদন্ত করেছে। পুলিশের চার্জশিটের ভিত্তিতে আদালত তাদের ফাঁসি দিয়েছেন। সেখানে এটি (আরজি কর মামলা) খুব গুরুতর বিষয়।
সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আমাদের হাতে থাকলে আমরা অনেক আগেই ফাঁসির রায় করিয়ে দিতে পারতাম। আমি জানি না কীভাবে আর কি যুক্তি দিয়েছে সিবিআই। সবটা তারাই করেছে। আমাদের হাত থেকে মামলাটি ইচ্ছা করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা নরপিশাচদের চরমতম শাস্তি চেয়েছিলাম। আমি সন্তুষ্ট নই। ফাঁসির সাজা হলে অন্তত মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।
উল্লেখ্য, কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে গত ৮ আগস্ট মৌমিতা দেবনাথ নামের এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। মৃত ওই চিকিৎসক স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। কর্তব্যরত ট্রেইনি চিকিৎসকরা প্রতি রাতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেমিনার রুমে বিশ্রাম নেন। সেদিন রাতে ফুড ডেলিভারি সংস্থার কাছ থেকে খাবার আনান চেস্ট মেডিসিন বিভাগের ওই চিকিৎসক। সহযোগী অন্যান্য চিকিৎসকের সঙ্গে খাবার ভাগ করে খান তিনি। সেদিন মধ্যরাতে অলিম্পিকে জ্যাভলিন থ্রোর ফাইনালে নেমেছিলেন ভারতের নিরজ চোপড়া। সেই খেলা চিকিৎসকরা সবাই মিলে দেখেন। রাত প্রায় দেড়টা নাগাদ ইভেন্ট শেষ হয়। এরপর ২টার দিকে ঘুমোতে যান ৩১ বছর বয়সী ওই নারী চিকিৎসক।
পরদিন সকালে সহযোগী এক চিকিৎসক দেখতে পান, সেমিনার রুমে পড়ে রয়েছে চিকিৎসকের মরদেহ। শরীরের নিম্নাঙ্গে কোনো কাপড় নেই। শরীরের ওপরের অংশের পোশাকও ছেঁড়া। পাশে পড়ে রয়েছে তার ভাঙা চশমা। শুক্রবার হাসপাতালেই নিহতের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্তেই অনুমান করা হয়, ধর্ষণ শেষে খুন করা হয় ওই নারী চিকিৎসককে।
মন্তব্য করুন