ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকেই ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের অবনতি ঘটে। বাংলাদেশ সরকার তাকে ফেরানোর জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদনও করেছে।
এমন পরিস্থিতে ‘শেখ হাসিনা ভারতের জন্য অনেক ভালো কাজ করেছেন, তাই তাকে প্রয়োজনে আমৃত্যু ভারতে থাকতে দেওয়া উচিত’ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের সাবেক কূটনীতিক, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা মণি শংকর আইয়ার।
কংগ্রেস নেতা আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে যত দিন ইচ্ছা ভারতে থাকার সুযোগ দেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, গত ডিসেম্বরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকা সফর করেছিলেন এবং সেখানে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন, যা অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল।
রোববার (১২ জানুয়ারি) কলকাতায় ১৬তম আপিজয় সাহিত্য উৎসবে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে এই সাক্ষাৎকার দেন মণি শংকর আইয়ার।
তিনি বলেন, এ ধরনের আলোচনা অব্যাহত রাখা দরকার এবং ভারতের উচিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সরাসরি মন্ত্রী পর্যায়ে যোগাযোগ স্থাপন করা।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভারতের জন্য অনেক ভালো কাজ করেছেন, তাই তাকে যত দিন প্রয়োজন, এমনকি সারা জীবন পর্যন্ত ভারতে থাকতে দেওয়া উচিত। তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনার জন্য ভারতের আশ্রয় দেওয়া একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনে পতন ঘটে ৭৭ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের। এরপর দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন হাসিনা। এখনো সেখানেই আছেন তিনি।
মণি শংকর আইয়ার আরও বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা সত্যি, তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা শেখ হাসিনার সমর্থকদের ওপর রাজনৈতিক হামলা। তিনি বলেন, হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা সত্য হলেও অনেক ক্ষেত্রে এগুলো রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে সৃষ্ট।
এছাড়া, পাকিস্তান এবং ভারত সম্পর্ক নিয়ে আইয়ার বলেন, পাকিস্তানের জনগণ ভারতীয়দের মতোই, শুধু ভাগ্যের কারণে তারা আলাদা দেশে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে পারি, কারণ কাশ্মীর ইস্যুতে মনমোহন সিংয়ের দেখানো পথ অনুসরণ করা উচিত।
মণি শংকর আইয়ার ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে বলেন, আমরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে সক্ষম, কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে সাহসী নই। তিনি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের পাশাপাশি আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের বিষয়ে ভারতের সতর্ক অবস্থানও তুলে ধরেন।
মন্তব্য করুন