ভারতীয় রুপির মূল্য আরও কমে গেছে এবং এখন এটি ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে। বর্তমানে, প্রতি ডলারের বিপরীতে রুপির দাম ৮৫ দশমিক ৯৭।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) মার্কিন ডলারের শক্তিশালী হওয়া, অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি এবং ভারতের শেয়ারবাজারে নেতিবাচক মনোভাবের কারণে রুপির দাম কমে যায়। খবর দ্য ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেসের।
প্রসঙ্গত, গত বছরের শেষের দিকে রুপির দরপতন শুরু হয় এবং একাধিক দফায় তা আরও কমে যায়। কয়েকদিন আগে, বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা জানিয়েছিল যে রুপি ৮৬ পর্যন্ত নেমে যেতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্যি হয়ে ৮৬ রুপি কাছাকাছি চলে আসে।
মুদ্রার এই পরিস্থিতি দেশটির অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। শেয়ারবাজারে রুপির কমতির কারণে পতন অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
রুপির এই দরপতনের কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচও বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষত, যারা বিদেশে পড়াশোনা করছেন বা আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা করছেন, তাদের জন্য এটি আরও বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। রুপির মূল্য কমার ফলে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি এবং বিদেশে পড়াশোনা করা আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে, যা সাধারণ মানুষকে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে বাধ্য করছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রুপি এবং শেয়ারবাজার উভয়ই অস্থির থাকবে এবং আগামীতে আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।
এ ছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে, রুপি কমার অন্যতম কারণ হলো আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের শক্তিশালী হওয়া। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ডলারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বন্ডের বিপরীতে অতিরিক্ত মুনাফা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যার ফলে রুপির মূল্য কমে যাচ্ছে।
আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাংকের উপাত্ত অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ভারতের বাণিজ্যঘাটতি গত বছরের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি, ভারত থেকে বিপুল পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহার হয়েছে। শেষ প্রান্তিকে প্রায় ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন (১ হাজার ৩০ কোটি) ডলার বিনিয়োগ প্রত্যাহার হয়েছে, যা রুপির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
এইসব কারণে রুপি আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং এর মূল্য আরও কমতে পারে, যা ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে।
মন্তব্য করুন