ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বেড়া নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার সীমান্তে অনুপ্রবেশ নিয়ে বাড়তি উদ্বেগের মধ্যে মালদার বৈষ্ণবনগরের সুখদেবপুরে বিএসএফ একতরফাভাবে বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করে। এরপর বিএসএফ ও বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিজিবি এর বিরোধিতা করলে মঙ্গলবার কিছু সময়ের জন্য কাজ শুরু হয়। এদিন দুপুরের পর দুই বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠকের পর কাজ আবারও স্থগিত করা হয়। এখন পর্যন্ত কাজ পুনরায় শুরু হয়নি।
বিএসএফের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বেড়া দেওয়ার কাজটি অত জরুরি নয়। তাই আমরা সাময়িকভাবে তা স্থগিত রেখেছি। যাতে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা, সংঘর্ষ ও বিভ্রান্তি এড়ানো যায়। কাজ শিগগিরই শুরু হবে। তবে কবে, কখন শুরু হবে আমরা তা নির্ধারণ করিনি।’
এদিকে গত দুদিনে বিএসএফের বাহিনী ওই সীমান্ত এলাকায় আরও বাড়ানো হয়েছে। ক্যাম্প অফিসগুলো সীমান্তের কাছাকাছি স্থাপন করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি চালানো হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কিছু মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বালু ও মাটির বাঙ্কার নির্মাণ ও বিজিবি বাহিনীর তৎপরতার ছবি শেয়ার করা হয়েছে। কিছু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিএসএফের বেড়া নির্মাণকাজে নিয়োজিত ভারতীয় শ্রমিকদের অস্ত্রের মুখে হুমকি দেওয়া হয়। যার ফলে কাজ থেমে যায়।
বিএসএফের কর্মকর্তা বলেন, ‘কিছু মিডিয়া উত্তেজনা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে আমরা আবারও নিশ্চিত করছি, বৈষ্ণবনগরে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা শুধু উত্তেজনা এড়াতে কাজ সাময়িকভাবে স্থগিত রেখেছি।’
বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ২১৬ কিলোমিটার, যার ৫০ শতাংশ অংশে এখনও বেড়া নির্মাণ করা হয়নি। ফলে সীমান্তে অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও অবৈধ কার্যক্রমের জন্য এই এলাকাগুলি ঝুঁকিপূর্ণ। দেশটির মালদায় ১৭২ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে প্রায় ২৭ কিলোমিটার অংশে বেড়া নেই। বর্তমানে বৈষ্ণবনগরের ১ হাজার ২০০ মিটার অবশিষ্ট এলাকা বেড়া দিয়ে ঘেরা নিয়ে বিরোধ চলছে। বিএসএফের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈষ্ণবনগরে বেড়া নির্মাণকাজ গত বছর শুরু হয়েছিল। কিন্তু বর্ষার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছিল। কাজ পুনরায় শুরু হলে, বিজিবির বিরোধিতার মুখে পড়েন। তবে কাজ পুনরায় শুরু করবেন তারা।
কুচবিহারের মেখলিগঞ্জের দাহগ্রাম সীমান্তেও গ্রামবাসীরা সীমান্তের কাছে বেড়া নির্মাণ করার সময় বিজিবি কাজটি বন্ধ করে দেয়। গ্রামবাসীদের সঙ্গেও সংঘর্ষ বাধে। গ্রামবাসীরা জানান, তারা নিজেদের ক্ষেতের ফসল রক্ষার জন্য বাংলাদেশ থেকে গরু প্রবেশ বন্ধ করতে বেড়া নির্মাণ করছিলেন। বিএসএফের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে বিজিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মন্তব্য করুন