তিব্বতের ইয়ালুং জাংবো নদীতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণ করবে চীন। চীনের এই প্রকল্প নিয়ে ভারত শুরু থেকে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে ভারতীয় জলসীমার নিচু অঞ্চলে পানির প্রবাহ এবং পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে চীনকে নিম্ন অববাহিকার দেশগুলোর স্বার্থ বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে ভারত। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ভারতের এই উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে চীন জানিয়েছে, আলোচ্য বাঁধ নির্মাণের প্রকল্পটি দশক ধরে সমীক্ষা করা হয়েছে। এ বাঁধ পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি ভাটির দেশগুলোর ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
ভারতে চীনের দূতাবাস জানায়, চীন সবসময়ই সীমান্তবর্তী নদীর উন্নয়ন নিয়ে দায়িত্বশীল আচরণ করে। এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ক্লিন এনার্জি তৈরির জন্য নেওয়া হয়েছে। এটি জলবায়ু পরিবর্তন ও বন্যা সংক্রান্ত বিপর্যয় মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।
চীনের মুখপাত্র ইউ জিং জানান, দশক ধরে এই জলবিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। প্রকল্পটির নিরাপত্তা ও পরিবেশ সুরক্ষার জন্য যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এটি নিম্ন অববাহিকার দেশের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। তারা নিম্ন অববাহিকার দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখবে। দুর্যোগ প্রতিরোধ ও পুনরুদ্ধার কাজেও সহযোগিতা করবে।
সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া জানায়, গত মাসে চীন বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। এটি নির্মাণে ১৩৭ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে। বাঁধটি ভারতীয় সীমান্তের কাছে তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপর নির্মিত হবে। নদীটি ভারতের অরুণাচল প্রদেশে প্রবাহিত হয়ে পরে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধটিও চীনে। মধ্য চীনের থ্রি গর্জেস ড্যাম নামের ওই বাঁধের উৎপাদন সক্ষমতা ৮ হাজার ৮২০ কোটি কিলোওয়াট-ঘণ্টা। নতুন জলবিদ্যুৎ বাঁধটির উৎপাদন সক্ষমতা হবে এর তিন গুণ।
যুক্তরাষ্ট্রও চীনের বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পগুলোকে গভীর উদ্বেগের চোখে দেখছে। এক মার্কিন কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের উজানের বাঁধগুলো অনেক ক্ষেত্রে পরিবেশ ও জলবায়ুতে উল্লেখযোগ্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে।
মন্তব্য করুন