ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে এবারের মহাকুম্ভ মেলার এক বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠেছেন গঙ্গাপুরি মহারাজ। যাকে ভক্তরা ‘ছোটুবাবা’ নামেও চেনেন।
এই সাধক এক চমকপ্রদ রেকর্ড গড়েছেন- ৩২ বছর ধরে গোসল করেননি! অথচ, নিজে গোসল না করলেও ভক্তদের পুণ্যস্নানে উৎসাহিত করছেন তিনি। তার এই অদ্ভুত সাধনার খবরটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে হিন্দুস্তান টাইমসে।
গঙ্গাপুরি মহারাজ। আসামের কামাখ্যা পীঠের ৫৭ বছর বয়সী এই সাধক। ৩ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার ব্যক্তি তিনি। তার জীবনের একটি বিশেষ সংকল্পের কারণে ৩২ বছর ধরে শরীরে পানি স্পর্শ করেননি। তবে, তিনি এর কারণ ব্যাখ্যা করেননি বিস্তারিতভাবে। তার এই অদ্ভুত সিদ্ধান্ত তীর্থযাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি করেছে।
তার এই ভিন্নধর্মী সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি তার আধ্যাত্মিক জীবনযাত্রার একটি অংশ। তিনি শরীরের কোনো অংশকে বিশুদ্ধ করার জন্য পানি ব্যবহার করেন না।
গঙ্গাপুরি মহারাজ নিজে ৩২ বছর গোসল না করলেও ভক্তদের এ পথে না হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার জীবনযাত্রা এবং সাধনা তার নিজস্ব উদ্দেশ্য পূরণের জন্য। তবে সাধারণ মানুষের জন্য গোসল অত্যন্ত জরুরি।
তাই সাধক হিসেবে তিনি যে পথে হাঁটছেন, সেটি শুধু তার আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্যের জন্য। অন্যরা যেন তাদের শরীর এবং মন পরিষ্কার রাখে, সে বিষয়ে তিনি সতর্ক করেছেন।
এবারের মহাকুম্ভ মেলা, যা ১২ বছর পরপর আয়োজিত হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি আধ্যাত্মিক মিলনমেলা। গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতী নদীর তীরে, প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার ও নাসিকে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তীর্থযাত্রীরা এখানে আসেন পুণ্য অর্জন করতে।
আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় দেড় মাস ধরে চলবে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত এই মহাকুম্ভ মেলা। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের মেলায় প্রায় ৪৫ কোটি মানুষ সমাগম করবেন। বিশাল এই সংখ্যক মানুষের জন্য ২শ বিলাসবহুল কটেজসহ হাজার হাজার তাঁবু তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়াও, মহাকুম্ভ মেলা চলাকালীন বিভিন্ন আধ্যাত্মিক সাধক, গুরুরা তাদের ভক্তদের জন্য বিশেষ পুণ্যস্নান ও ধর্মীয় উপদেশ প্রদান করবেন। গঙ্গাপুরি মহারাজও এই সময় তার ভক্তদের সাথে সময় কাটাতে প্রস্তুত রয়েছেন। তিনি শারীরিকভাবে অনবদ্য আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রদান করবেন।
গঙ্গাপুরি মহারাজের এই বিচিত্র সাধনা এবং তার জীবনযাত্রা এবার মহাকুম্ভ মেলায় আসা তীর্থযাত্রীদের কাছে একটি বিশেষ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
মন্তব্য করুন