মাত্র ১৩ হাজার রুপি বেতনে সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি করেন হর্শাল কুমার ক্ষীরসাগর। অথচ এই স্বল্প আয়ের চাকরি করেও তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। বিএমডব্লিউ গাড়িতে চলেন এবং প্রেমিকাকে উপহার দিয়েছেন কোটি টাকার ফ্ল্যাট।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে। হর্শাল মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজিনগরের বিভাগীয় স্পোর্টস কমপ্লেক্সে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে কাজ করেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি এই প্রতিষ্ঠান থেকে ২১ কোটি ৬০ লাখ রুপি লুট করেছেন। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
কীভাবে ঘটল এ দুর্নীতি?
তদন্তে উঠে এসেছে, ২৩ বছর বয়সী হর্শাল কৌশলে স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ই-মেইল পরিবর্তন করেন। অফিসের পুরোনো লেটারহেড ব্যবহার করে তিনি ব্যাংকের কাছে আবেদন করেন এবং হুবহু একটি ই-মেইল ঠিকানা তৈরি করেন, যেখানে কেবল একটি অক্ষর পরিবর্তন করা হয়েছিল। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এটি আসল ই-মেইল মনে করে যাবতীয় তথ্য সেখানে পাঠাতে শুরু করে।
হর্শাল এই ই-মেইলের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা চালু করেন। এরপর, ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি ১৩টি ভুয়া অ্যাকাউন্টে ২১ কোটি ৬০ লাখ রুপি স্থানান্তর করেন।
কীভাবে অর্থ ব্যয় করলেন হর্শাল?
এই বিপুল অর্থ দিয়ে তিনি ১ কোটি ২০ লাখ রুপির একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি, ১ কোটি ১৩ লাখ রুপির একটি এসইউভি এবং ৩২ লাখ রুপির একটি মোটরসাইকেল কিনেন। এ ছাড়া, প্রেমিকাকে ছত্রপতি সম্ভাজিনগরের বিমানবন্দরের পাশে বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছেন। এমনকি, প্রেমিকার জন্য হীরকখচিত চশমাও কেনেন তিনি।
পুলিশের অভিযানে যা জানা গেছে
মহারাষ্ট্র পুলিশ ইতিমধ্যে হর্শালের বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করেছে। পাশাপাশি, তার সহকর্মী যশোদা শেঠী এবং যশোদার স্বামী বিকে জীবনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হর্শালকে অর্থ লুটপাটে সহায়তা করেছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সন্দেহ করছে, হর্শালের সঙ্গে আরও কয়েকজন ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারেন। তার গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ক্রীড়া কর্মকর্তার তৎপরতায় ফাঁস
ক্রীড়া বিভাগের একজন কর্মকর্তা আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি বুঝতে পেরে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই এ দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
মন্তব্য করুন