বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে আবারও তীব্র মন্তব্য করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি দাবি করে বলেছেন, আমার কাছে খবর আছে, ঢাকা থেকে ৩ লাখ হাতে টানা রিকশা কলকাতা দখল করতে রওনা দিয়েছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তিনি এ মন্তব্যটি করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দ এ খবর প্রকাশ করেছে।
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আমার কাছে খবর আছে, ঢাকা থেকে ৩ লাখ হাতে টানা রিকশা কলকাতা দখল করার জন্য রওনা দিয়েছে। এ ছাড়া, তাদের আছেটা কী? রাফাল যুদ্ধবিমান রাখা আছে আমাদের হাসিমারায় (পশ্চিমবঙ্গের আলিদুয়ারপুর শহরের বিমানঘাঁটি)।
তবে তথ্যের স্পষ্টতার জন্য এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, বাংলাদেশে বর্তমানে হাতে টানা রিকশা ব্যবহার হয় না; প্যাডেলচালিত ও ব্যাটারিচালিত রিকশা বেশ প্রচলিত।
এ ছাড়া, শুভেন্দু অধিকারী এর আগের দিনও বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও তীব্র মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ভারত যদি একটি রাফাল যুদ্ধবিমান পাঠায়, তাহলে বাংলাদেশ কেঁপে উঠবে। তার মতে, বাংলাদেশ ভারতের সামরিক শক্তি সম্পর্কে কোনো ধারণা রাখে না।
বিজেপি নেতার এসব মন্তব্যের মধ্যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। এর পাশাপাশি, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নানা পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা নানা মন্তব্য করছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির অপর এক নেতা সুকান্ত মজুমদারও বাংলাদেশ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে থামানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গের সিভিক ভলান্টিয়াররাই যথেষ্ট। এ ছাড়াও, ভারতের হায়দ্রাবাদের বিজেপি নেতা টি রাজা সিংও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে মন্তব্য করেন এবং বাংলাদেশের পতাকা ছিঁড়ে ফেলেন।
একই দিন সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, হিন্দু, মুসলিম, শিখ বা খ্রিস্টানরা দাঙ্গা শুরু করেন না, সমাজবিরোধীরা দাঙ্গা উসকে দেয়।
মমতা আরও বলেন, বাংলায় খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করা উচিত নয় এবং বাংলাদেশে নিপীড়নের প্রতিবাদে কলকাতায় হিন্দু ও মুসলিমদের একসঙ্গে আন্দোলন করতে দেখে তিনি খুশি। এ ছাড়া, কিছু মানুষের কলকাতা দখল করার মন্তব্যের বিরুদ্ধে তিনি বলেন, আপনারা দখল করতে আসবেন আর আমরা ললিপপ চুষবো?
এদিকে ভারতের বিভিন্ন নেতাদের এমন হুমকির মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সোমবার বাংলাদেশে একদিনের সফরে এসেছেন। যদিও তার এই সফর পূর্ব নির্ধারিত ছিল, তবে অনেকের মতে, এটি দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা কমানোর একটি সুযোগ হতে পারে।
মন্তব্য করুন