ভারতীয় মুদ্রার বাজারে অস্থিরতা চলছে। গত তিন দিনে ভারতীয় রুপি তার ইতিহাসের সর্বনিম্ন মানে পৌঁছেছে।
মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) এক ডলার সমমূল্যে রুপি ৮৪.৭৫ এ পৌঁছায়। এটি ছিল ভারতীয় রুপির রেকর্ড সর্বনিম্ন মান।
বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনের এই দরপতনের পেছনে কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছে। প্রথমত, ভারতের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসের তুলনায় কম হয়েছে।
২০২৩ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে ভারতীয় অর্থনীতি ৫.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। দ্বিতীয়ত, মার্কিন ডলারের শক্তিশালী অবস্থান এবং ইউরোপীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে রুপি আরও কমেছে।
এছাড়া, ২০২২ সালের মার্কিন নির্বাচনের পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু মন্তব্যও রুপি দুর্বল হওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ট্রাম্প বলেছিলেন, ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা) দেশগুলোকে ডলারের পরিবর্তে অন্য কোনো মুদ্রা ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, না হলে তাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
বিশ্বের বৃহত্তম মুদ্রা বাজারে এ ধরনের অস্থিরতার কারণে ভারতীয় রুপি তার মান হারিয়েছে। তবে, রুপি দরপতনের পর ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (আরবিআই) এবং বিদেশি ব্যাংকগুলো কিছুটা হস্তক্ষেপ করেছে, যার ফলে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে।
বিশ্ববাজারের সংকট এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও রুপি দুর্বল হওয়ার অন্যতম কারণ। ভারতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সংকোচন সৃষ্টি হয়েছে, যা রুপির ওপর চাপ ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, রুপি কমে যাওয়ার কারণে আমদানি খরচ বাড়বে এবং মুদ্রাস্ফীতির হারও বৃদ্ধি পেতে পারে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে।
ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও ভারতের অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী। তিনি আরও জানান, ডলার সূচক বৃদ্ধির ফলে উদীয়মান বাজারের মুদ্রায় চাপ পড়েছে, তবে ভারতের মুদ্রার অবস্থানও কিছুটা শক্তিশালী রয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রুপির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে ভারতের অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।
মন্তব্য করুন