ভারতে দিল্লির আকাশে ধোঁয়া আর দূষণের ঘনত্ব এমন এক মাত্রায় পৌঁছেছে, যা ৪৯টি সিগারেট খাওয়ার সমান। এ পরিস্থিতি নগরবাসীর জন্য এক বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১২টা ৩০ মিনিটে রাজধানীতে বায়ু দূষণের সূচক ছিল ৯৭৮, যা ‘বিপজ্জনক’ স্তরের মধ্যে পড়ে এবং প্রায় ৪৯টি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতিকর।
এদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত দিল্লির চারপাশের পরিবেশ ছিল ঘন ধোঁয়ায় ঢাকা, যেখানে মাটির দিকে নেমে আসা ধূলিকণার সঙ্গে মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। বিশেষভাবে, মুন্ডকা, দ্বারকা সেক্টর ৮ এবং রোহিনীর মতো এলাকা ছিল সবচেয়ে বেশি দূষিত, যেখানে বায়ু দূষণের সূচক যথাক্রমে ১৫৯১, ১৪৯৭ এবং ১৪২৭ রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে, দিল্লির পার্শ্ববর্তী হরিয়ানায় বায়ু দূষণের সূচক ছিল ৬৩১, যা প্রায় ৩৩টি সিগারেট খাওয়ার সমান এবং উত্তরপ্রদেশে এই সূচক ছিল ২৭৩, যা ১০টি সিগারেট খাওয়ার সমান। দূষণের কারণে রাজধানী ও আশপাশের এলাকার পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত ২৮টি ট্রেন দেরিতে চলছে এবং ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১৬০টির বেশি ফ্লাইট সকাল সাড়ে ৮টার আগেই উড়তে পারেনি।
দিল্লিতে দূষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সুপ্রিম কোর্ট আবারও কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যানের চতুর্থ স্তরের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, দিল্লি সরকারকে এই অবস্থায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিল্লিতে অতিরিক্ত দূষণ নিয়ন্ত্রণে, সোমবার থেকে প্রশাসন নির্মাণকাজ, মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, স্কুলগুলোতে অনলাইনে ক্লাস চলছে এবং কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এমন ভয়াবহ দূষণের ফলে জনস্বাস্থ্যের ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য এটি এক বড় হুমকি। নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে এ ধরণের দূষণ নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
মন্তব্য করুন