বকেয়া আদায়ে অন্তবর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে ভারতের আদানি পাওয়ার। এরই ধারাবাহিকতায় কোম্পানিটি বাংলাদেশে বিদ্যুতের সরবরাহ আরও কমিয়ে দিয়েছে।
শুক্রবার (০৮ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিকস টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিদ্যুৎ খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, ভারতের আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ আরও কমিয়ে দিয়েছে। কোম্পানিটি বাংলাদেশের কাছে বকেয়া ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বকেয়া আদায়ে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ঝাড়খন্ডের এ কেন্দ্রটি বাংলাদেশে এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করে।গত আগস্টে এ তা কমিয়ে ১৪০০-১৫০০ মেগাওয়াটে নিয়ে আসে কোম্পানিটি। আর চলতি মাসে তা কমে ৭০০ থেকে ৭৫০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছে।
পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের তথ্য এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন কর্মকর্তার তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে সরবরাহ আরও কমিয়ে প্রায় ৫২০ মেগাওয়াটে নামিয়ে এনেছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন, আমরা ধীরে ধীরে বকেয়া পরিশোধ করছি। কেউ সরবরাহ বন্ধ করলে বিকল্প ব্যবস্থা নেব। আমরা কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীকে আমাদের জিম্মি করতে দেব না।
এর আগে ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের আদানি গড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আদানি গ্রুপকে আরও ২ হাজার কোটি টাকার (প্রায় ১৭৩ মিলিয়ন ডলার) অর্থায়ন করেছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আদানি পাওয়ার এ অর্থায়নের বিষয়ে একটি নতুন লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) পেয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) থেকে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে বিদ্যুতের জন্য আদানি গ্রুপের কাছে পূর্বের বকেয়া রয়েছে ৮৪৩ মিলিয়ন ডলার, যা সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে পরিশোধের বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। ৭ নভেম্বরের মধ্যে এ বকেয়া পরিশোধ না করা হলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার ঘোষণা দেয় আদানি পাওয়ার। এমন পরিস্থিতিতে, বিদ্যুৎ সরবরাহের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বিপিডিবি নতুন এ এলসিটি ইস্যু করে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন এলসি বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ভারতের আইসিআইসিআই ব্যাংকে প্রদান করা হয়েছে, যা আদানি গ্রুপকে দেওয়া তৃতীয় এলসি। এ ছাড়া আগের এলসিগুলো বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির সঙ্গে সমন্বিত ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় আদানি পাওয়ারের দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট রয়েছে, যেগুলোর ক্ষমতা ৮০০ মেগাওয়াট করে এবং সম্পূর্ণ উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয়। এটি বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ পূরণ করে।
মন্তব্য করুন