আরজি কর হাসপাতালে শিক্ষানবিস চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় নতুন আদেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নির্যাতিতার নাম ইন্টারনেট জগতে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, গুগ্লে সার্চ করলে উইকিপিডিয়ার পাতায় নির্যাতিতার নাম দেখা যাচ্ছে। অবিলম্বে উইকিপিডিয়াকে তা মুছতে হবে।
ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতিতার নাম-পরিচয় ব্যবহার না করার ব্যাপারে ভারতীয় আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের ঘটনায় কেউ যদি নির্যাতিতার নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন, তবে তাকে দোষী হিসাবে গণ্য করা হবে। এ বিষয়ে ভারতীয় আইনে শাস্তির কথাও উল্লেখ আছে। আইনানুযায়ী, দোষীর আর্থিক জরিমানা এবং কারাবাসের সাজা হতে পারে।
প্রথম দিকে আরজি করের ঘটনাতেও ওই চিকিৎসকের নাম-পরিচয় গোপন ছিল। কিন্তু দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়লে নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আসে। নিপীড়িত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে তার নাম স্লোগানেও লেখা হয়। সে সঙ্গে উইকিপিডিয়াসহ ইন্টারনেট দুনিয়ায় বিভিন্ন আর্টিকেলে নির্যাতিতার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলে কলকাতা হাইকোর্টও উদ্বেগপ্রকাশ করেছিল। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে নির্যাতিতার নাম এবং ছবি সরতে শুরু করে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে পুলিশ।
কিন্তু উইকিপিডিয়া থেকে নির্যাতিতার নাম সরানো হয়নি। মঙ্গলবারের শুনানিতে বিষয়টি উত্থাপিত হলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত ৯ আগস্ট হাসপাতালের সভাকক্ষে রাতে ওই নারী চিকিৎসক বিশ্রাম নিতে গিয়েছিলেন। পরে সেখানে ৩১ বছর বয়সী ওই শিক্ষানবিশ নারী চিকিৎসকের মরদেহ পাওয়া যায়। তখনই তার রক্তাক্ত দেহে জখমের চিহ্ন ছিল। তাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় দোষীদের ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে উত্তাল হয় পশ্চিমবঙ্গ। ক্রমেই তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। আরজি করের চিকিৎসকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের চিকিৎসক সংগঠন কর্মসূচি ঘোষণা করে। আন্দোলন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে গড়ায়।
মন্তব্য করুন