গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে নিয়ে ভারতের ওপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে এ ইস্যুতে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম দ্য ডিপ্লোমাট।
এতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে নিয়ে নয়াদিল্লির ওপর চাপ বাড়ছে। এটি ভারতকে কূটনৈতিক ধাঁধায় ফেলে দিতে পারে। এমনকি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কও পরীক্ষার মুখে পড়তে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনগত দিক দিয়ে ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে বাধ্য। ২০১৩ সালের বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার প্রত্যার্পণ চুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এই চুক্তির ধারা অনুসারে শেখ হাসিনাকে ভারতের ফেরত দিতে হবে। তবে কিছু ধারা দেখিয়ে তারা প্রত্যার্পণে অস্বীকৃতিও জানাতে পারে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত হত্যা, নির্যাতন, গুম, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অসংখ্য মামলা হয়েছে। ফলে তাকে এখন ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়াটাও জটিল হতে পারে।
দ্য ডিপ্লোমাট জানিয়েছে, ভারত কয়েকটি কারণ দেখিয়ে শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিতেও পারে। তবে এমনটি করলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
২০১৩ সালেরপ্রত্যার্পণ চুক্তিতে যা বলা আছে
ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ২০১৩ সালে প্রত্যার্পণ চুক্তি হয়। এরপর ২০১৬ সালে চুক্তিটি সংশোধন করা হয়। এতে বলা হয়, কোনো অভিযুক্ত ব্যাক্তির সেই মামলায় এক বছর বা তার বেশি কারাদণ্ডের সম্ভাবনা থাকলে তাকে ফেরত দিতে হবে।
তবে চুক্তির ৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো দেশ যদি মনে করে যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা হয়েছে তাহলে তাকে প্রত্যার্পণে অস্বীকৃতি জানাতে পারবে। একই ধারায় বলা হয়েছে, হত্যা, সন্ত্রাসবাদ ও অপহরণের মতো অপরাধগুলো রাজনৈতিক অভিযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া যেসব মামলা হয়েছে তার সবগুলো হত্যা, অপহরণ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো বিবেচনায় ভারত ৬ নম্বর ধারা অনুসারে অস্বীকৃতি জানানোর সুযোগ নেই।
অন্যদিকে চুক্তির ৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘অসৎ নিয়তে’ কারও বিরুদ্ধে মামলা হলে তাকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানানো যাবে। ভারত এ ধারাটি ব্যবহার করতে পারে। তারা অসৎ নিয়তে মামলা হয়েছে বলে দাবি করতে পারে।
ভারতের অন্যতম মিত্র ছিলেন শেখ হাসিনা। ফলে ভারতের পক্ষ থেকে এ ধারায় সমর্থন পেতে পারেন তিনি। তবে বাংলাদেশ সরকার তাকে ফেরত চাওয়ার পর ফেরত দেওয়া না হলে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে।
মন্তব্য করুন