মহিষের মালিক কে, তা নিয়ে সালিশ যায় গ্রাম পঞ্চায়েতে। কিন্তু সেখানে কোনো মীমাংসা হয়নি। পরে পুলিশের কাছে যায় এই সালিশ। তবে কীভাবে মহিষের মালিককে খুঁজে পাওয়া যাবে, তার কূলকিনারা করতে পারছিল না পুলিশ।
এরপরই সবাইকে অবাক করে দিয়ে মহিষটি রাস্তায় ছেড়ে দেয় তারা। কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে থেকে মহিষ তার মালিকের বাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করে। আর এভাবেই মহিষের আসল মালিক খুঁজে পায় পুলিশ।
শুনতে অবাক লাগলেও সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশে। কয়েক দিন আগে নন্দনাল সরোজের বাড়ি থেকে তার একটি মহিষ হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি শেষে তিন দিন পর মহিষটির সন্ধান পান নন্দলাল সরোজ। পাশের হরিকেশ গ্রামের হনুমান সরোজের বাড়িতে মহিষটি বেঁধে রাখা ছিল। কিন্তু হনুমান মহিষটিকে তার দাবি করে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে উপায়ন্তর না পেয়ে মহেশগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন নন্দনাল।
অভিযোগ পেয়ে গেল বৃহস্পতিবার মহিষের দুই দাবিদারকে থানায় ডেকে নেয় পুলিশ। সঙ্গে গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানকেও ডেকে পাঠানো হয়। তার পরই মহিষের মালিককে চিহ্নিত করতে একটি সভার আয়োজন করে পঞ্চায়েত। সাত ঘণ্টা ধরে মহিষের মালিক কে, তা নিয়ে চলে টানাপোড়েন। কিন্তু আসল মালিক খুঁজে না পেয়ে শেষমেশ বিষয়টি আবার পুলিশের কাছেই যায়।
অনেক চিন্তাভাবনার পর সংকট সমাধানের একটি অভিনব পথ খুঁজে বের করেন মহেশগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তা শ্রাবণ কুমার সিং। তিনি পঞ্চায়েতে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দেন, সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব মহিষের ওপরই ছেড়ে দিতে হবে! মহিষকে রাস্তায় একা ছেড়ে দেওয়া হবে। তখন মহিষ যে ব্যক্তিকে অনুসরণ করবে, মালিক তিনি বলেই ধরে নেওয়া হবে। পুলিশ কর্মকর্তার এই সিদ্ধান্তে গ্রামবাসীও রাজি হয়ে যায়। পরে নন্দলাল ও হনুমানকে তাদের গ্রামে যাওয়ার পথে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এবার আসল মালিক খুঁজে পেতে মহিষটিকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর মহিষটি সোজা নন্দলালের পেছন পেছন রায় আসকারানপুর গ্রামের দিকে রওনা হলো। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এরপর নন্দলালের কাছে মহিষটি হস্তান্তর করা হয়। পুলিশের এমন কৌশলে আসল মালিক খুঁজে পাওয়ায় উল্লাসে ফেটে পড়েন গ্রামবাসী। পরে মহিষের অন্য দাবিদারকে পুলিশ ও গ্রামবাসী মিলে ভর্ৎসনা করে।
মন্তব্য করুন