রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন মোড় নিয়েছে। রাশিয়ার একেবারে ভেতরে ঢুকে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। কিয়েভের ওই হামলায় রাশিয়ার সবচেয়ে অত্যাধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান এসইউ-৫৭ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রোববার (০৯ জুন) ইউক্রেনের জিইউআর প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, রাশিয়ার ভেতর একটি বিমানঘাঁটিতে দেশটির সর্বশেষ প্রজন্মের এসইউ-৫৭ ফাইটার জেটে প্রথমবারের মতো আঘাত করেছে ইউক্রেন বাহিনী।
রাশিয়ার এসইউ-৫৭ ফাইটার জেট স্টেলথ প্রযুক্তির তৈরি দেশটির সবচেয়ে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। কিন্তু ইউক্রেনের বাহিনী অত্যাধুনিক সেই বিমানে প্রথমবারের মতো আঘাত হেনেছে। স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যায়, রাশিয়ার এসইউ-৫৭ যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হছে।
টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে জিইউআর অবশ্য জানায়নি ইউক্রেনের বাহিনী কীভাবে এসইউ-৫৭-এ আঘাত হেনেছে বা কোন ইউনিট এমন সাফল্য পেয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার জনপ্রিয় একজন যুদ্ধপন্থি সামরিক ব্লগার ফাইটারবোম্বার, যিনি অ্যাভিয়েশন নিয়ে ভিডিও বানান, জানিয়েছেন, এসইউ-৫৭ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর সঠিক। একটি ড্রোনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসইউ-৫৭।
জিইউআর জানিয়েছে, ওই এসইউ-৫৭ আখতুবিনস্ক এয়ারফিল্ডে পার্ক করে রাখা ছিল। ওই বিমানঘাঁটি ইউক্রেনে ফ্রন্ট লাইন থেকে ৫৮৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। জিইউআরের পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, ৭ জুন এসইউ-৫৭ অক্ষত অবস্থায় রয়েছে, পরের দিনের ছবিতে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পুরো মাত্রার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন। মিসাইল ও ড্রোন দিয়ে প্রায়ই দুই দেশ শত শত কিলোমিটার দূরে শত্রু সীমানার ভেতর হামলা চালায়। ইউক্রেনের কাছে মস্কোর মতো এত বিপুল মিসাইল নেই। তবে রাশিয়ার একেবারে ভেতরে ঢুকে হামলার জন্য দূরপাল্লার ড্রোন তৈরির দিকে নজর দিয়েছে ইউক্রেন। আর সেই ড্রোন দিয়ে প্রায়ই রাশিয়ায় হামলা চালাচ্ছে কিয়েভ।
রাশিয়ান ব্লগার ফাইটারবোম্বার বলছে, শার্পনেলের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই ফাইটার জেট। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং যুদ্ধবিমানটি মেরামত করা যাবে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি এই যুদ্ধবিমানটি আর মেরামত না করা যায়, তাহলে এটাই হবে রাশিয়ার প্রথম কোনো এসইউ-৫৭ হারানোর ঘটনা।
এদিকে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ নোভাস্তির সামরিক সংবাদদাতা অ্যালেকজান্ডার খারচেনকো একটি রহস্যময় পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি হামলার কথা স্বীকার না করলেও সামরিক যুদ্ধবিমান সুরক্ষায় হেঙ্গার স্বল্পতার কথা তুলে ধরেন।
রাশিয়ার অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এসইউ-৫৭কে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম প্রজন্মের এফ-৩৫ এর সঙ্গে তুলনা করা হয়। কিন্তু এফ-৩৫ এর তুলনায় এসইউ-৫৭ অতটা সফলতা দেখাতে পারেনি। ২০১৯ সালে এসইউ-৫৭ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। আর মাত্র দুই বছর আগে অর্থাৎ ২০২২ সালে সিরিয়াল উৎপাদন শুরু হয় এসইউ-৫৭-এর। বলা হয়ে থাকে, এসইউ-৫৭ যুদ্ধক্ষেত্রে বিভিন্ন ভূমিকা পালনে সক্ষম একটি যুদ্ধবিমান।
মন্তব্য করুন