স্নায়ু যুদ্ধের পশ্চিমা শক্তির সঙ্গে প্রথমবারের মতো মুখোমুখি সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া। এর মধ্যেই দুই পক্ষই নিজেদের পরমাণু নিয়ে অবস্থান পুনর্বিবেচনা করার কথাও জানিয়েছে।
শুধু তাই নয় রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে নিজেদের অস্ত্রও মাঠে নামিয়েছে মার্কিন সামরিক জোট ন্যাটো। এমন অবস্থায় অনেকেই মনে করছেন ইউক্রেনের মাটিতে নিজেদের মৃত্যুই ডেকে আনছে বিশ্বের বৃহত্তম এ সামরিক জোটটি। সত্যিই কি তাই?
ইউক্রেনকে সুরক্ষা দেয়ার কথা বললেও গোপনে ইউরোপের দেশটি নিয়ে নিজেদের নীতি বদলে ফেলেছে মার্কিন প্রশাসন। ফলে রুশ বাহিনীর মোকাবিলায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যা চাইছেন তার সবটা পূরণ হবে না।
এশিয়া টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে এমন দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক উপকমিটির সাবেক প্রধান পরিচালক স্টিফেন ব্রায়েন।
ইউক্রেন নিয়ে নিজেদের নীতি পাল্টালেও মার্কিন অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। তবে তার সীমানাও নির্ধারণ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতিতে মারাত্মক সেনা ঘাটতিতে রয়েছে জেলেনস্কি বাহিনী। দিন যত গড়াচ্ছে, যুদ্ধে হতাহত সেনার সংখ্যা ততই বাড়ছে।
রুশ সূত্র বলছে, মে মাসে ৩৫ হাজারের মতো ইউক্রেনীয় সেনা হতাহত হয়েছে। সেনাবাহিনীর এই শূন্যতা সহজেই পূরণ করতে পারছে না কিয়েভ।
অন্যদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে নিজেদের এগিয়ে রাখতে নতুন করে বিপুল সেনা মোতায়েন করছে রুশ বাহিনী। মনে করা হচ্ছে, খারকিভ অঞ্চলে শক্তি বাড়াতে এসব সেনা বাড়াচ্ছে মস্কো। আবার অন্যদের মতে, সামি অঞ্চলে নতুন যুদ্ধফ্রন্ট খুলতে চাইছে রাশিয়া।
অনেক সামরিক বিশ্লেষক আবার মনে করছেন, রাশিয়া খুব শিগগির নিয়ন্ত্রণরেখাজুড়ে হামলা জোরদার করবে, যাতে আরও বেশি ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে তারা।
এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ানদের আক্রমণের চাপে ইউক্রেনের পতন ঘটতে পারে বলে শঙ্কায় রয়েছে ন্যাটো। আর এমনটা ঘটলে কী করতে পারেন পুতিন তা ভালো করেই অনুমান করতে পারছে ন্যাটো জোট।
অন্যদিকে রাশিয়ার সঙ্গে কোনো প্রকার সমঝোতায় রাজি নয় ন্যাটো। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এমনটা হলে তা হবে জো বাইডেনের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পশ্চিমা অস্ত্র দিয়ে রুশ ভূখণ্ডে হামলা ইউক্রেন যুদ্ধের গতিধারাকে বদলে দিতে পারে।
পশ্চিমাদের নতুন এই নীতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। রাশিয়া অবশ্যই এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে চাইবে।
আর তা হলে যে কোনো ধরনের কোনো প্রতিশোধের ঘটনা ইউরাপে বড় পরিসরে যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ন্যাটো যদি রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিমান হামলা কিংবা স্থলসেনা পাঠায় তাহলে পরিস্থিতি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। আর এতে অনেক ন্যাটো সদস্যই একমত নয়। হতে পারে ইউক্রেনের মাটিতেই ন্যাটো তার ধ্বংস ডেকে আনবে।
মন্তব্য করুন