দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এ যুদ্ধে মৃত্যু আর ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা নিয়েও বিভিন্ন লুকোচুরি। বিশেষ করে নিজেদের শক্তিমত্তা আর রাশিয়ার দুর্বলতা প্রচারে মিথ্যা তথ্য ছড়াতে কোনো চেষ্টার কমতি রাখছে না ইউক্রেন ও পশ্চিমা মিত্ররা।
তারই একটি নগ্নরূপ সামনে এসেছে বিবিসির প্রতিবেদনে। যেখানে প্রশ্ন উঠে রুশ ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে নির্লজ্জের মতো কিয়েভের বিভিন্ন দাবির সত্যতা নিয়ে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার নিহত সেনাসংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা এ যুদ্ধে উল্লিখিত সেনা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি। তবে সেনা নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
বিবিসি রাশিয়ান, স্বাধীন মিডিয়া গ্রুপ মিডিয়াজোনা এবং স্বেচ্ছাসেবীরা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এ মৃত্যুর সংখ্যা গণনা করছে। এ সময় তারা কবরস্থানে সৈন্যদের কবর, বিবিসির দাপ্তরিক প্রতিবেদন, সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ উন্মুক্ত উৎস থেকে পাওয়া তথ্য এই পরিসংখ্যান তৈরিতে ব্যবহার করেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধ শুরুর প্রথম ১২ মাসে যতসংখ্যক সেনা নিহত হয়েছে, তার চেয়ে পরবর্তী ১২ মাসে ২৫ শতাংশ সেনা বেশি নিহত হয়েছে।
দ্বিতীয় বছরে রুশ সেনা নিহত হয়েছে ২৭ হাজার ৩০০ জনের বেশি। যদিও যুদ্ধের দ্বিতীয় বছরে ইউক্রেনের নতুন অনেক জায়গা দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী, কিন্তু তার বিনিময়ে হারাতে হয়েছে বহু প্রাণ।
তবে বিবিসির এ প্রতিবেদন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি রুশ কর্তৃপক্ষ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশ সেনা নিহত হওয়ার এই পরিসংখ্যানে রাশিয়া অধিকৃত দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে নিহত মিলিশিয়াদের সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত নয়। সেগুলো হিসাবে নিলে সামগ্রিক সেনা মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ হাজারের কয়েক গুণ বেশি হবে।
এদিকে ইউক্রেনও যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণহানির সংখ্যা খুব কমই প্রকাশ করেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধের দুই বছর পূর্তিতে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্য নিহত হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন দাবি করে যুদ্ধের প্রথম বছরেই রাশিয়ার ১ লাখ ৪৮ হাজার ১৩০ সেনা নিহত হয়েছে।
সে সময় ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায় ইউক্রেন যুদ্ধের বর্ষপূর্তির পর দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ৬৬০ সেনা নিহত হয়েছেন। এর পর দিন নিহত হয়েছেন আরও ৬৫০ রুশ সেনা। যদিও এমন দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি কিয়েভ।
মন্তব্য করুন