রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই ইউক্রেনের সেনাপ্রধানের দায়িত্ব থাকা জেনারেল ভ্যালরি ঝালুঝিনিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তারা যায়গায় নিয়োগ পেয়েছেন ওলেকসন্দার সিরস্কি। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি তাকে নিয়োগ দেন। খবর বিবিসির।
রাশিয়ার সঙ্গে চলা যুদ্ধের পুরোটা সময় ঝালুঝিনি ইউক্রেনের সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। আর সিরস্কি সম্মুখ সমরে দেশটির স্থলবাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
জেনারেল সিরস্কির জন্ম ১৯৬৫ সালে ভ্লাদিমিরে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের এই অঞ্চলটি বর্তমানে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত। ১৯৮০-এর দশকে ইউক্রেনে বসবাস শুরু করেছিলেন সিরস্কি। তার বয়সী সশস্ত্র বাহিনীর অন্যদের ক্ষেত্রে যেমনটি ঘটেছিল—রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থিত হাইয়ার মিলিটারি কমান্ড স্কুলে তিনিও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন। তার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেওয়া অনেকেই এখন রুশ বাহিনীতে কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১৯ সালে ইউক্রেনের স্থলবাহিনীর নেতৃত্ব নেওয়ার আগে দেশটির পূর্বাঞ্চলে নিয়োজিত স্থলবাহিনীর অপারেশন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন সিরস্কি। ওই দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালে রুশ বাহিনী ক্রিমিয়া আগ্রাসন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। সে সময় রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য প্রতিরক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য তাকে ‘অর্ডার অব বোদান খমেলনিটস্কি’ সামরিক খেতাবে ভূষিত করা হয়েছিল।
সিরস্কিকে নিয়ে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞেরা বলে, সিরস্কির অপারেশন প্রক্রিয়া রাশিয়ার জেনারেলদের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। তিনি ‘হাইব্রিড যুদ্ধের’ গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং নিজের সেনাদের মনোবলকে অগ্রাধিকার দেন। এ জন্য তিনি প্রতিদিনই শত শত সৈন্যের বার্তা পড়েন এবং যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়মিত তাদের পরিদর্শন করেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া হামলা শুরু করার পর ইউক্রেনের বেশ কিছু সাফল্যের জন্য সিরস্কিকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়। যুদ্ধের শুরুতে ভ্লাদিমির পুতিনের সৈন্যরা ইউক্রেন সীমান্তে জড়ো হলে সিরস্কি সীমান্তের কাছাকাছি থাকা ঘাঁটিগুলোর ভারী অস্ত্রপাতি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রুশ বিমান হামলায় এসব যন্ত্রপাতি ধ্বংস হয়ে যাক, তা তিনি চান না।
এর আগে ভ্যালরি ঝালুঝিনিকে বরখাস্তের পর জেলেনস্কি বলেন, দেশের সামরিক নেতৃত্বকে এখন নতুন করে ঢেলে সাজানোর সময়। ঝালুঝিনিকে বরখাস্তের পর তার জায়গায় নতুন আরেকজনকে স্থলাভিষিক্তও করা হয়েছে। দেশটির স্থলবাহিনীর কমান্ডার নতুন সেনাপ্রধান হয়েছেন।
ঝালুঝিনিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকেই নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তবে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিরোধের গুঞ্জনের মধ্যেই তার বরখাস্তের খবর এলো। এর আগে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে ঝালুঝিনিকে দায়িত্ব ছাড়তে বলেছিলেন জেলেনস্কি।
মন্তব্য করুন