গুরুতর অসুস্থ পুতিনের ঘনিষ্ঠ ভক্ত ও চেচেন নেতা রমজান আখমাতোভিচ কাদিরভ। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সূত্র। নিউইয়র্ক টাইমস ও ইয়াহু নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইয়াহু নিউজ জানিয়েছে, ইউক্রেনের গোয়েন্দা কর্মকর্তা অ্যান্দ্রিয় ইয়োসোভ দেশটির সংবাদমাধ্যম অবজরিভাটেলকে বলেন, হাসপাতাল ও রাজনৈতিক একাধিক সূত্র বলছে তার অবস্থা গুরুতর। তিনি আগে থেকেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। বর্তমানে তার সেসব অবস্থার অনেক অবনতি হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থার তৈরি হয়েছে। তবে তিনি কোনো ধরনের আঘাত পাননি।
অ্যান্দ্রিয় বলেন, এটি তার কোনো আঘাতজনিত অসুস্থতা নয়। তিনি দীর্ঘসময় ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তার এসব অবস্থার কারণেই এখন অবস্থা মারাত্মক। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
মাদকের প্রতি তীব্র আসক্তির কারণে চেচনিয়ার এই যুদ্ধবাজ নেতার শারীরিক অবস্থা গত কয়েক মাস ধরে খারাপ বলে গুজব রয়েছে। কিডনি জটিলতাসহ নানা ধরনের সমস্যায় ভোগা রমজান কাদিরভকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে বলেও অনেকে ধারণা করেন।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কাদিরভ মূলত পুতিনের সেনা, পুতিনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে পরিচিত। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহযোগিতার জন্য সেনা মোতায়েন করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে পিতা আখমাদ কাদিরভের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন রমজান কাদিরভ। দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধে বিদ্রোহী চেচনিয়া প্রদেশটি পুনরুদ্ধার করার পর পুতিনের শাসনভার তুলে দেন তার অনুগত চেচেন নেতা আখমাদ কাদিরভের হাতে। রাশিয়ান সামরিক বাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা পরিষদের বিরোধিতা সত্ত্বেও চেচনিয়াকে প্রায় স্বায়ত্তশাসিতভাবে পরিচালনা করতে পুতিনের সম্পূর্ণ সমর্থন পেয়েছিলেন রমজান কাদিরভ। বিনিময়ে পুতিন চেয়েছিলেন কাদিরভকে এই অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে হবে।
চেচেন সরকারের বাজেটের প্রায় ৯-দশমাংশের জোগান দেয় রাশিয়া। বিশাল রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির পাশাপাশি দেওয়া হয় পুরস্কার এবং প্রণোদনা। রাজধানী গ্রোজনিতে কাদিরভ এবং তার মিত্ররা সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করলেও, অনেক শক্তিশালী শত্রুও ছিল তার। ওয়াগনার গোষ্ঠী ছিল সেই শত্রুদের একজন।
ওয়াগনারের অনেক পেশাদার সৈন্য ছিলেন যারা চেচেন যুদ্ধে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। এক সময় রমজান কাদিরভ নিজেও ছিলেন সেই বিদ্রোহীদের মধ্যে। তাই জাতিগতভাবে চেচেনদের জন্য ওয়াগনার বাহিনীতে যোগদান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
ইউক্রেন যুদ্ধে প্রিগোজিন এবং রমজান কাদিরভের মধ্যে একটি মিল দেখা গেছে। তারা দুজনেই রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন। তারা দুজনেই রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে অযোগ্য বলে আক্রমণ করেছেন এবং এর মাধ্যমে তারা নিজেদের ভাড়াটে বাহিনীকে সামনে নিয়ে এসেছেন।
মন্তব্য করুন